মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভূতের আতঙ্ক৷ হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার ইউনিটের নতুন ভবনে নাকি ‘ভূত’ রয়েছে৷ রাত বাড়লেই নানা অদ্ভুত কাণ্ড হাসপাতালে৷ কখনও বিকট শব্দে কান পাতা দায় হচ্ছে৷ কখনও আবার নিজে থেকেই খুলে যাচ্ছে দরজা-জানলা৷ শুধু তাই নয়, অনেকেই নাকি অ্যাসিডের বোতল সিঁড়ি দিয়ে গড়াতে দেখেছেন৷ মালদহ মেডিক্যালের ট্রমা কেয়ার ইউনিটে এমনই সব ভূতুড়ে-কাণ্ডে রীতিমতো আতঙ্কে কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মীরা৷ ভূতের ভয়ে রাতে ডিউটি করতে চাইছেন না তাঁরা৷ যদিও হাসপাতালে ভূত নিয়ে নেহাতই বুজরুকি ছড়ানো হচ্ছে বলে দাবি বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীদের৷ ঘটনার পিছনে কারও যোগ রয়েছে বলে মনে করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও৷
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার ইউনিট৷ নতুন করে তৈরি হওয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার ইউনিটে নাকি ‘অশরীরী আত্মা’রা ঘুরে বেড়ায়৷ রাত হলেই নাকি তাদের উৎপাত বাড়ে৷ রাত বাড়লে ট্রমা কেয়ার ইউনিটের মধ্যে থেকে নানা শব্দ ভেসে আসতে থাকে৷ নিজে থেকে ভবনের দরজা-জানলা খোলে ও ফের বন্ধ হয়, এমনই দাবি সেখানে কর্মরত নার্সিং স্টাফ থেকে শুরু করে অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের৷ ভূতের ভয়ে কেউ রাতে ট্রমা কেয়ার ইউনিটে ডিউটি করতে চাইছেন না৷
সম্প্রতি ভূত নিয়ে ‘নালিশ’ জানাতে মালদহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করেন ওই ট্রমা কেয়ার ইউনিটে কর্তব্যরত নার্সিং স্টাফেরা। ভূতের আতঙ্কে তাঁরা কেউই রাতে ডিউটি করবেন না বলে জানান অধ্যক্ষকে। নার্সিং স্টাফদের দাবি, ‘‘সদ্য তৈরি হওয়া এই ভবনে রাতে ডিউটি থাকলেও রোগী থাকে না৷ রাত বাড়লেই অদ্ভুত সব কাণ্ড শুরু হয়ে যায়। এই ভবনে কখনও দরজা-জানলার আওয়াজ হয়। আবার কখনও অ্যাসিডের বোতল গড়িয়ে পড়ে। রাতে মাঝে-মধ্যেই নানা ধরনের শব্দে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। ভূতের ভয় মনে বাসা বেঁধেছে। কিভাবে কাজ করব বুঝতে পারছি না।’’
আরও পড়ুন- ১৫৬ দিনে সর্বনিম্ন অ্যাক্টিভ কেস, সামান্য বাড়ল দৈনিক সংক্রমণ
এদিকে, হাসপাতালে ভূতের আতঙ্ক ছড়ানোয় অস্বস্তিতে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতীম মুখোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, ‘ওয়ার্ডের নার্সিং স্টাফরা আমাকে বিস্তারিত জানিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই ওয়ার্ডের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। কেন ওখানে বিভিন্ন ধরনের আওয়াজ এবং অন্যান্য কর্মকান্ড ঘটছে তা খতিয়ে দেখা হবে৷ এটি একটি বিরাট বড় ওয়ার্ড৷ এখন রোগীর সংখ্যা অনেক কমে গেছে৷ ফাঁকা ওয়ার্ডে কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে। তবে অ্যাসিডের বোতল ছোড়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। শীঘ্রই ওয়ার্ডে সিসি ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
অন্যদিকে, হাসপাতালে ভূতের আতঙ্ক ছড়ানোর বিষয়টি বুজরুকি বলে মনে করছে বিজ্ঞান মঞ্চ৷ ঘটনার পিছনে অসাধু কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে বলে আশঙ্কা বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যদের৷ এব্যাপারে মালদহ জেলা বিজ্ঞান মঞ্চের সম্পাদক সুনীল দাস বলেন, ‘‘ভূত বলে কিছু নেই। ট্রমা কেয়ার ইউনিট ভবনটি নতুনভাবে তৈরি হয়েছে। সেখানে রোগীর সংখ্যা প্রায় নেই বললেই চলে। ফাঁকা ওই ভবনে কিছু অসাধু চক্র নিজেদের স্বার্থ-সিদ্ধির জন্য ভয় দেখিয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করছে।’’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন