Burdwan News : মাইক বাজানোকে ঘিরে ধুন্ধুমার সংঘর্ষ! জামালপুরে ধৃত ৯। কালীপুজোর কমিটি থেকে তৃণমূলের বুথ সভাপতি ও পঞ্চায়েত সদস্যকে বাদ দেওয়া নিয়ে সংঘাত তৈরি হয়। পুজোর ত্বারস্বরে মাইক বাজানো
নিয়ে সেই সংঘাত রুপ নিয়ে নেয় সংঘর্ষে। রবিবাররাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত দফতায় দফায় চলা সংঘর্ষে মৃত্যু হল শীতল খাঁ (৭৩) নামে এক বৃদ্ধের।জখম হয়েছেন বেশকয়েকজন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর জখম এক বৃদ্ধ বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই ঘটনা নিয়ে এখন তপ্ত হয়ে রয়েছে পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের সগড়াই গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত চিন্তামণিপুর গ্রাম। ফের যাতে গ্রামে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য স্বয়ং এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) অভিষেক মণ্ডলের নেতৃত্বে গ্রামে জারি রয়েছে পুলিশি টহলদারি।
বৃদ্ধ শীতল খাঁ এর মৃত্যু নিয়ে তাঁর পরিজনরা বেশ কয়েকজনের নামে খণ্ডঘোষ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।এসডিপিও অভিষেক মণ্ডল জানিয়েছেন,দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে ১৩ জনের নামে এফআইআর রুজু হয়েছে। তার মধ্যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । বাকিদের সন্ধান চলছে। অশান্তি ও সংঘর্ষের কারণ প্রসঙ্গে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,দোল উৎসবের সময় কালি পুজো হয় চিন্তামণিপুর গ্রামে। ত্বারস্বরে মাইক বাজানো নিয়ে রবিবার গভীর রাতেই ওই গ্রামের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে ছোটখাটো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ গ্রামে পৌছে তখনকার মতো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এরপর রাত পেরিয়ে সকাল হলে একটি গোষ্ঠীর লোকজন মন্দিরের দরজা খুলতে গিয়ে দেখেন মন্দিরের মূল ফটকে তালা মারা রয়েছে।
মৃতের ভাইপো আদিত্য খাঁ বলেন,’এদিন সকালে ৪০ জন মিলে আক্রমণ চালিয়েছে। আমরা ছিলাম মোটে ১২ জন। আমার কাকার বুকে পাথরের আঘাত লাগে।সেই আঘাতেতিনি মারা যান। পুজো কমিটি থেকে বাদ যাওয়া গ্রামের বর্তমান তৃণমূলের বুথ সভাপতি শ্রীকান্ত খাঁ এবং পঞ্চায়েত সদস্য গৌরহরি খাঁ মন্দিরের দখল নেওয়ার জন্যে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে চক্রান্ত করে গ্রামে অশান্তির ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আদিত্য খাঁ অভিযোগে জানিয়েছেন।
আর জখমরা দাবি করেছেন, বর্তমান বুথ সভাপতি ও পঞ্চায়েত সদস্যদের নেতৃত্বেই রাতে হামলা চলেছে।সকালে একই রকম হামলা চালানোর জন্য ওরা ইট, মদের বোতল জড়ো করে রেখেছিল।মন্দিরের দরজাতেও তালা মেরে রেখে দেয়। সেই খবর পেয়ে মন্দিরের দায়িত্বে থাকা আদিত্যরা ছুটে গেলে তাঁদেরকে বোতল দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। তা শুনে সবাই ছুটে গেলে বোতল আর ইঁট ছুঁড়তে থাকে। কারওর কারওর হাতে টাঙ্গি, কাটারিও ছিল। মৃতের আরেক ভাইপো সুশান্ত খাঁ বলেন, “মন্দিরকে ঘিরে কোনও রাজনীতি নেই। কিন্তু মঙ্গলবারের ঘটনাতেই অবশ্যই রাজনীতি ছিল।”
যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন,সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত ৪০-৫০টা মাইক তারস্বরে বাজানো হচ্ছিল। তা নিয়ে প্রতিবাদ করার জন্যেই ঝামেলা অশান্তি তৈরি হয়েছিল।কোনও আঘাত নাকি মাইকের বিকট আওয়াজে ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে তার হওয়া দরকার বলে ওই গ্রামবাসীরা দাবি করেছেন। এ নিয়ে পুলিশের বক্তব্য ,আপাতদৃষ্টিতে মৃতের শরীরে আঘাতের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই আঘাতে না মাইকে আওয়াজে মৃত্যু,তা জানা যাবে।
তৃণমূলের খণ্ডঘোষ ব্লকের সভাপতি অপার্থিব ইসলাম বলেন, “আমাদের সবার সামাজিক জীবন রয়েছে। পাড়ার কালিপুজোয় তারস্বরে মাইক বাজালে শিশু-বৃদ্ধদের কথা মাথায় রেখে কেউ আওয়াজ কমানোর কথা বলে থাকলে,কী অন্যায় করেছে? এ নিয়ে যাঁরা রাজনীতি খুঁজছেন, তাঁদের উদ্দেশ্য নিয়েও অপার্থিব বাবু সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ।