গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে একটা সময় ঘনঘন উত্তপ্ত হয়ে উঠত দার্জিলিং পাহাড়। কিন্তু, সেই দিন এখন অতীত। দার্জিলিং এখন ব্যস্ত গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা জিটিএ নির্বাচন নিয়ে। দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে পাহাড়বাসী বুঝেছেন, মৌলিক সুযোগ-সুবিধাই বড়। কোভিড আবহে যা অত্যন্ত খারাপ হয়েছিল।
সেখান থেকে ধীরে ধীরে পাহাড় ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। আর সাবলীল হতে পাহাড়বাসীর এখন দরকার জনমুখী প্রশাসন। যা কেবল জিটিএ নির্বাচনই দিতে পারে। ২৬ জুন, রবিবার সেই বহু প্রত্যাশিত নির্বাচন। দীর্ঘ ১০ বছর বাদে নির্বাচন হচ্ছে জিটিএতে।
জিটিএ নির্বাচন হলে, লাভটা কী? উত্তরটা দিলেন কার্শিয়াং-এর সিরুওয়ারি গ্রামের বছর ২৬-এর প্রীতম সানদাস। তাঁর কথায়, 'এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা দীর্ঘদিনের। নির্বাচনটা হয়ে গেলে উন্নয়ন হবে। আশা করি, সমস্যাটা মিটবে। আসলে জল আমাদের জীবনের একটি বড় সমস্যা। এখন বর্ষাকাল, তাই জল পাচ্ছি। কিন্তু গ্রীষ্মকালে আমরা মাঝে মাঝে জলই পাই না। এই সমস্যাটা যদি স্থায়ীভাবে মিটে যায়, তবে খুব ভালো হয়। এখন ওই সব পৃথক রাজ্য টাজ্য আমাদের মাথায় নেই।' প্রীতম পেশায় অপটিশিয়ান। দোকানে বসেন। সেখান যাওয়ার জন্য ক্যাবের অপেক্ষা করছিলেন। তারই ফাঁকে কথাগুলো বললেন।
সিরুভারি-ভিত্তিক ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের মালিক কৃষ্ণা হিংমাঙের কথায়, 'আমি জলের জন্য মাসে ৭০০ টাকা দিই। আগে আমরা পাহাড়ে দুই কিলোমিটার হেঁটে জল আনতাম। কয়েক বছর হয়ে গেছে যে এখানে একটা পাইপলাইন হয়েছে। তবুও আমরা নিয়মিত জল পাই না। গোর্খাল্যান্ড হল এলাকার সমস্যার স্থায়ী সমাধান।
আরও পড়ুন- হাসপাতালের ৮ তলা থেকে সটান নীচে পড়লেন রোগী, গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনা শহরে
কিন্তু, কোনও দল এখনও পর্যন্ত আমাদের গোর্খাল্যান্ড দিতে পারেনি। কিন্তু, আমরা জিটিএ পেয়েছি। এটাও কম কিছু না। একদিনে সব হয় না।' পাহাড়বাসীর এই মনোভাব বুঝেই গোর্খা নেতারাও তাঁদের অবস্থান বদলেছেন। তাঁদের কাছে স্বাধীন গোর্খাল্যান্ডের বদলে এখন জিটিএ নির্বাচনই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে, এখনও বেশ কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা গোর্খাল্যান্ড ছাড়া আর কিছু ভাবতেও পারেন না। যেমন পাপ্পু গুরুং।
সোনাদা রেল স্টেশনের উলটোদিকে পাপ্পুর দোকান। ২০১৭-য় জিএনএলএফ সমর্থক তাসি ভুটিয়া খুনের পর বিক্ষোভকারীরা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সমর্থক পাপ্পুর দোকান পুড়িয়ে দিয়েছিল। পাপ্পু, ভোটের আগের দিনও নিশ্চিত নন, জিটিএকে দিয়ে পাহাড়বাসীর কোনও লাভ হবে কি না। যেমন তিনি এখনও ঠিক করতে পারেননি, ভোট দিতে যাবেন কি না।
Read full story in English