অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজ্যপাল দ্বন্দ্ব চরমে। বিবাদ গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলাতেই শুক্রবার রায় ঘোষণা করল শীর্ষ আদালত।
কী নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের?
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, রাজ্যপাল আর অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন না। সম্প্রতি রাজ্যপাল ১১ জন অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। শীর্ষ আদালের নির্দেশ, ওই ১১ জন অন্তর্বর্তী উপাচার্য আর কোনও সুযোগসুবিধা পাবেন না। এঁরা বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তও নিতে পারবেন না।
উপাচার্য নিয়োগ বিষয়ে রাজ্যপালকে নোটিস দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এক সপ্তাহের মধ্যে আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছে জবাব তলব করেছে শীর্ষ আদালত। উপাচার্রায নিয়োগ ইস্যুতে রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীকে বৈঠকে বসতে হবে।
ডিভিশন বেঞ্চের আদেশ অনুসারে, অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের যা যা আপত্তি তা পরের শুনানিতে আদালতে জানাতে হবে।
এদিন বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি সূর্যকান্ত মন্তব্য করেন, 'অপ্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ চায় না আদালত। উপাচার্য নিয়োগের ক্ষমতা কার, সেটা সংবিধান মেনে বেস্ট প্র্যাকটিস অনুযায়ী চলতে হবে। যা কিছু ঘটছে তা দুর্ভাগ্যজনক। দিনক্ষণ ঠিক করুন। একসঙ্গে বসুন।'
তবে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত সার্চ কমিটিতে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি রাখা নিয়ে নবান্নের আবেদন নিয়ে এদিন বেঞ্চকে কিছু বলতে শোনা যায়নি।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৩১ অক্টোবর।
কী দাবি শিক্ষামন্ত্রীর?
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য় বসু বলেছেন, ''আচার্য থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন রাজ্যপাল। আদালতের নির্দেশে মানীয়ার কাছে ক্ষমা চেয়ে ওনার উচিত বৈঠকে বসা। মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করতে যে বিল ওনার কাছে পড়ে রয়েছে তাতে উনি অবিলম্বে সম্মতি দিন। তাতেই বাংলার মানুষের আশা-আকাঙ্খাকে সম্মান করা হবে।''
উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত
রাজ্যের ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও কোনও স্থায়ী উপাচার্য নেই। তার মধ্যেই ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করে চলেছেন রাজ্যপাল। রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল নবান্ন।
গত ২১ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। রাজ্য সরকার, রাজ্যপাল ও ইউজিসি-কে তিন থেকে পাঁচ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম সুপারিশ করতে হবে সার্চ কমিটির জন্য।
আরও পড়ুন- ফাঁসির বদলে আমৃত্যু জেল! কামদুনি কাণ্ডের রায়ে দোষীদের ‘লঘু’ সাজা হাইকোর্টের?