ভোট-পর্বে লাগাতার সন্ত্রাস, রাজ্য চষে বেড়াচ্ছেন রাজ্যপাল। ভাঙড়, ক্যানিং, কোচবিহারের পর এবার বাসন্তী। সোমবার সকালে শিয়ালদহে নেমে সটান গাড়িতে বাসন্তী পৌঁছলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। দলেরই গোষ্ঠী সংঘর্ষে বাসন্তীতে নিহত হন যুব তৃণমূলের কর্মী জিয়ারুল মোল্লা। তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এদিন কথা বলেছেন রাজ্যপাল।
পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর থেকে মৃত্যু মিছিল দেখছে বাংলা। ফি দিন সংঘর্ষ, বোমাবাজি, খুনোখুনির রাজনীতিতে চরম উত্তপ্ত হচ্ছে পরিস্থিতি। এর আগেও ভোট ঘিরে হিংসা-বিধ্বস্ত ক্যানিং, ভাঙড়ে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। হিংসা কবলিত এলাকা ঘুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তিনি। এরপর কোচবিহারেও হিংসা বিধ্বস্ত বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখেছেন তিনি। কথা বলেছেন আক্রান্তদের পরিবারের সঙ্গে। এমনকী আহতের দেখতে হাসপাতলে পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। হিংসা থামাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তিনি পুলিশকে নির্দেশও দিয়েছিলেন।
সোমবার সকালেই পদাতিক এক্সপ্রেসে উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতায় ফেরেন রাজ্যপাল। তার আগে গতকাল বাসন্তীতে তৃণমূলকর্মী খুনের খবর তিনি পেয়েছিলেন। গতরাতে ট্রেন থেকেই নিহতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন রাজ্যপাল। সকালে শিয়ালদহে নেমে সোজা বাসন্তীর উদ্দেশে রওনা দেন সিভি আনন্দ বোস।
আরও পড়ুন- ভোররাতে বিকট আওয়াজে ঘুম ভাঙল গ্রামের, ফাঁকা মাঠে রক্তারক্তি কাণ্ডে হুলস্থূল!
শনিবার রাতে বাসন্তীর ফুল মালঞ্চ পঞ্চায়েতের সোপানের মোড়ের কাছে জিয়ারুল মোল্লা নামে এক তৃণমূলকর্মীকে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। নিহতের ছেলে মিজানুর মোল্লার অভিযোগ, রাজনৈতিক শত্রুতার জেরে তাঁর বাবাকে খুন করা হয়েছে। তিনি সরাসরি মাদার তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
এদিন রাজ্যপাল বাসন্তীতে গিয়ে নিহত তৃণমূলকর্মী জিয়ারুল মোল্লার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে ফুল মালঞ্চ পঞ্চায়েত এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের। রাজ্যপালের কাছে বাবার খুনে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন নিহত তৃণমূলকর্মীর মেয়ে।
আরও পড়ুন- কলকাতায় কাঁচা লঙ্কার ‘আগুন-দাম’, তাও বাংলাদেশে ট্রাক-ট্রাক লঙ্কা রফতানি ভারতের
পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাসন্তীর বিভিন্ন এলাকায় চরম অশান্তি ছড়াচ্ছে। এদিন রাজ্যপালকে কাছে পেয়ে একগুচ্ছ অভিযোগ জানান এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধেও তাঁরা সরব হয়েছেন। এলাকাবাসীর কথা শুনে রাজ্যপাল এদিন সেখানে হাজির থাকা ক্যানিংয়ের এসডিপিও-র সঙ্গে কথা বলেন। তাঁকে এদিন বেশ কিছু প্রশ্নও করেছেন রাজ্যপাল।
এরপরেই গ্রামবাসীদের তিনি জানিয়েছেন, কলকাতায় ফিরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের সঙ্গেও কথা বলবেন তিনি। গত কয়েকদিনে বাসন্তীতে কী কী হয়েছে, এর জন্য দায়ী কারা সেই সব ব্যাপার নিয়ে তিনি আলোচনা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এলাকায় শান্তি স্থাপনে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ করারও আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।