আচার্য বিল ইস্যুতে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজভবনের দ্বন্দ্ব আরও বাড়ল। এবার এই দ্বন্দ্বের ফল হিসেবে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। এর আগে রাজ্য সরকারের বারবার অনুরোধের পরও রাজ্যপাল আচার্য বিলে স্বাক্ষর করেননি। এনিয়ে যে বিবাদের সূত্রপাত হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের জমানায়। বর্তমান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সময়েও তা মেটেনি। আর, রাজ্যপাল স্বাক্ষর না-করায় আইন হয়নি আচার্য বিল। বিল হয়েই থেকে গিয়েছে।
সেই কারণে রীতিমতো হেস্তনেস্ত চেয়ে এবার জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। জনস্বার্থ মামলার মূল বক্তব্য, বিধানসভায় জনপ্রতিনিধিদের পাশ করা একটা বিলে সই না-করার ক্ষমতা কি আদৌ রাজ্যপালের আছে? আদৌ কি রাজ্যপালের এই আচরণ সংবিধান সম্মত? এমনিতে সংবিধানের ২০০ নম্বর ধারা অনুযায়ী, বিলকে আইন হতে গেলে রাজ্যপালকে তাতে স্বাক্ষর করতে হয়। আর, তাঁর যদি সেই বিল নিয়ে কোনও আপত্তি থেকে থাকে, তবে সেটা তিনি ফেরত পাঠাতে পারেন। কিন্তু, সেটাও কতবার? সেই ব্যাপারেও কি রাজভবন সংবিধান মানছে? সেই সব প্রশ্নই উঠে আসতে চলেছে এই জনস্বার্থ মামলায়।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ইতিমধ্যেই রাজ্যপালকে তাঁর এক্তিয়ার স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছেন, 'বিল অনন্তকাল ধরে আটকে রাখা যায় না।' তার মধ্যেই সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলে ৩১ মে বর্তমান বেশ কয়েকজন উপাচার্যের কাজের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁর পরিবর্তে মামলাটি শুনেছেন বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়। শুনানিতে এই মামলায় রাজ্যকে যুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১২ জুন, মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।
আরও পড়ুন- ‘সুপার-ডুপার হিট’ হাওড়া-এনজেপি বন্দে ভারত, ভাঁড়ার উপচে আয় রেলের
রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি অবশ্য লাগাতার আচার্য বিলের বিরোধিতা করে চলেছে। তাদের বক্তব্য, আচার্য বিলে রাজ্যপালকে বাদ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হলে শিক্ষায় রাজনৈতিক প্রভাব বাড়বে।