আমফানের ঝাপটা সামলে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে কলকাতা। সাইক্লোনের তাণ্ডবলীলার কয়েকদিন বাদে মহানগরের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্য়ুৎ ও পানীয় জল পরিষেবা চালু হল মঙ্গলবার। রাজ্য়ের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্য়োপাধ্য়ায় জানিয়েছেন, আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত ১০৩টি পুর এলাকার মধ্য়ে ৯৪টি এলাকাতেই বিদ্য়ুৎ পরিষেবা চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি ৮৫ শতাংশ এলাকায় টেলি পরিষেবা চালু করা হয়েছে।
উল্লেখ্য়, সুপার সাইক্লোনের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়েছে কলকাতা। ঝড়ের পর থেকেই শহরের একাধিক এলাকা বিদ্য়ুৎহীন হয়ে পড়ে। একাধিক এলাকায় পানীয় জলের সংকট দেখা দেয়। যার জেরে চরম দুর্ভোগের শিকার হন শহরবাসীর একাংশ। বিদ্য়ুৎ পরিষেবা ফেরানোর দাবিতে শহরের একাংশে বিক্ষোভের ছবিও সামনে আসে।
আরও পড়ুন: তৃণমূলে ঘূর্ণিঝড়, মন্ত্রীতে মন্ত্রীতে বাগযুদ্ধ
আমফানের তাণ্ডব প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রসচিব আরও জানান, ''ঝড়ের জেরে ১৬টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৮৬ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। প্রায় ৬ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মোট ৮.১৩ লক্ষ মানুষকে ত্রাণ শিবিরে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। বর্তমানে প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ ওই ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন। প্রত্য়ন্ত গ্রামাঞ্চলে অত্য়াবশকীয় পরিষেবা চালু করতে কিছুটা সময় লাগবে। ৯৪টি পুর শহরে বিদ্য়ুৎপরিষেবা চালু করা হয়েছে। আমরা ৫০ লক্ষ জলের পাউচ বিতরণ করেছি''।
বিদ্য়ুৎ পরিষেবা চালু করা প্রসঙ্গে আলাপনবাবু আরও জানিয়েছেন, ''সিইএসসি দাবি করেছে, বিদ্য়ুৎ পরিষেবা ফেরাতে তাঁরা কঠোর পরিশ্রম করছেন। পরিষেবা দ্রুত চালুর জন্য় তাঁরা রাজস্থান থেকে লোক এনেছেন বলে জানিয়েছেন''।
আরও পড়ুন: আমফানের জেরে পরিকাঠামোয় চাপ, রাজ্য চাইছে ধীরে ধীরে ফেরানো হোক পরিযায়ীদের
কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। তাঁর কথায়, ''আগামী কয়েকদিনে, সমস্ত রাস্তা থেকে ভেঙে পড়া গাছ সরানো হবে। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা থেকে সমস্ত ভেঙে পড়া গাছ সরানো হয়েছে''।
সিইএসসি-র এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ''কলকাতার ৯৭ শতাংশ এলাকায় বিদ্য়ুৎ পরিষেবা ফেরানো হয়েছে। পরিষেবা ফেরাতে যথাসাধ্য় চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ৩৩ লক্ষ উপভোক্তার মধ্য়ে ৩২ লক্ষ উপভোক্তাই পরিষেবা পেয়েছেন''।
এদিকে, বিপর্যয়ের পর বিদ্য়ুৎ পরিষেবা চালুর দাবিতে বিক্ষোভ অব্য়াহত। নাদিয়ালে বিক্ষোভে জখম হয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কলকাতার বাঘাযতীন, বৈষ্ণবঘাঁটা, বাঁশদ্রোণী, বেহালা, গড়ফা, গড়িয়াতেও বিক্ষোভ প্রদর্শন হয়েছে। কলকাতার পাশাপাশি জেলাতেও বিক্ষোভের ছবি সামনে এসেছে। শেওড়াফুলিতে কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন