Advertisment

দিওয়ালিতে ‘গ্রিন বাজি’! কিউ আর কোড স্ক্যানিংয়ে দূষণমুক্ত বাজি যাচাই ক্রেতাদের   

কিউ আর কোড স্ক্যান করে বাজি কেনার একেবারে নতুন পদ্ধতিতে বেশ আকৃষ্ট ক্রেতারা।

author-image
Sayan Sarkar
New Update
"Diwali Green Crackers, Diwali, Green Crackers, Green Fire Crackers, Fire Crackers

দিওয়ালিতে ‘গ্রিন বাজি’! কিউ আর কোড স্ক্যানিংয়ে দূষণমুক্ত বাজি যাচাই ক্রেতাদের

হাতে গোনা আর মাত্র একটা দিন। তারপরেই আলোর উৎসবে গা ভাসাতে তৈরি আমরা সকলেই। বাজি ছাড়া দিওয়ালি ‘সেলিব্রেশন’ ভাবাই যায়না। আলোর এই উৎসবে বাজি পোড়ানো ও ফাটানোর রেওয়াজ বহুদিনের। কিন্তু, তাতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়। তাই জাতীয় পরিবেশ আদালত দূষণমুক্ত বাজি ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে। আর পরিবেশ বান্ধব বাজি কিনতে মানুষজনের মধ্যে প্রবল উৎসাহ চোখে পড়ল টালা বাজি বাজারে। কিউ আর কোড স্ক্যান করে বাজি কেনার একেবারে নতুন পদ্ধতিতে বেশ আকৃষ্ট ক্রেতারা। নিজেরাই যাচাই করে নিচ্ছেন বাজির পিছনে থাকা কিউ আর কোড।

Advertisment

গত ২ বছর করোনার দাপটে বাজি ফাটানো একপ্রকার প্রায় বন্ধই ছিল। আলোর উৎসবের সেই রোশনাই কোথাও যেন ফিকে হয়ে দেখা দিয়েছিল। আর চলতি বছর করোনার দাপট অনেকটাই কমেছে। দিওয়ালির আনন্দে তাই কোন খামতি রাখতে চাইছেন না, মানুষজন। তবে এবছরও ময়দানে বসছে না বাজি বাজার। সময়ের অভাব আর আর্থিক সমস্যার কারণে ময়দানকে বাদ দিয়েই কলকাতায় বাজি বাজার বসছে এবার।

টালা, টালিগঞ্জ এবং যাদবপুর, এই তিন জায়গায় বাজি বাজার থেকে আতসবাজি কিনতে পারবেন ক্রেতারা। আতসবাজি উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান বাবলা রায় বলেছেন “যাঁরা সবুজ বাজি কিনছেন, তাঁরা যেন বারকোড দেখে বাজি কেনেন। বাজি পোড়ানো কোনওভাবে ক্ষতিকারক নয়, তবে তা যেন সবুজ আতসবাজি হয়”। দিওয়ালির আনন্দে গা ভাসাতে মানুষজনের ভিড় চোখে পড়ল টালা বাজি বাজারে। 

টালা বাজি বাজারে এই বছর মোট ৪৪ টি বাজির স্টল বসেছে। সবকটি স্টলেই রয়েছে পরিবেশ বান্ধব বাজি।  পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, দূষণমুক্ত বাজি এবং আগে যে ধরনের বাজি ব্যবহার হত, সবগুলোই পরিবেশের দূষণ ঘটায়। তাই বাজি ব্যবহার থেকে বিরত থাকা উচিত। তবে, পার্থক্য হল দূষণমুক্ত বাজিগুলো পুরনো ধরনের বাজির চেয়ে ৩০ শতাংশ কম বায়ুদূষণ ঘটায়। কম ধুলো তৈরি করে। ধুলো শুষে নয়। আর এতে বেরিয়াম নাইট্রেটের মতো বিপজ্জনক উপাদান থাকে না। তাই পরিবেশ রক্ষায় পরিবেশ বান্ধব বাজি নিয়ে মানুষজনের উৎসাহ রীতিমত নজর কেড়েছে।

বাজি বিক্রেতা পল্টু দাসের কথায়, "পরিবেশ বান্ধব বাজি কিনতে মানুষজন সকাল থেকেই স্টলে ভিড় করছেন। হয়ত দাম কিছুটা বেশি, কিন্তু পুরনো ধরনের বাজির চেয়ে ৩০ শতাংশ কম বায়ুদূষণের কারণে মানুষজনও এই পরিবেশ বান্ধব বাজির দিকে ঝুঁকেছেন। গত তিনদিনে ভালোই বিক্রিবাট্টা হয়েছে। আগামী ২ দিনে আরও বেশি বিক্রি বাড়বে বলেই আমাদের আশা”।

একই সুর ধরা পড়ল ডানলপ থেকে বাজি কিনতে আসা এক ক্রেতার গলাতেও। তিনি জানালেন, “গ্রিন বাজির দাম খানিক বেশি হলেও তা পরিবেশ বান্ধব। আমরা পরিবেশ বাঁচাতে ব্যাটারিচালিত গাড়ি ব্যাবহার করতে পারি তাহলে পরিবেশ বান্ধব বাজি ব্যবহারে অসুবিধা কোথায়?  বাজি পোড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পরিবেশের দিকেও তো নজর দেওয়া প্রয়োজন। আমি বাড়ির সকলের জন্য পরিবেশ বান্ধব বাজি নিয়ে যাচ্ছি, সকলকেই বলব, আসুন পরিবেশ বান্ধব বাজিতে মেতে উঠুক এবারের আলোর এই উৎসব”।

বাজি বাজারে কচিকাঁচাদের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মত। বাবার হাত ধরে বাজি বাজারে বাজি কিনতে এসেছে, শ্যামবাজারের ছোট্ট সাগ্নিক। হাতে সদ্য কেনা বাজির প্যাকেট ধরেই একগাল হেসে সাগ্নিক জানায়, “এই বছরে অনেক বাজি ফাটাব”। ইতিমধ্যেই সে কিনে ফেলেছে ডজন খানেক বাজি।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই সব দূষণমুক্ত বাজি CSIR NEERI লোগোর মাধ্যমে চিহ্নিত করা যায়। দূষণমুক্ত বাজি চিনতে প্লে স্টোর থেকে CSIR NEERI সবুজ QR কোড অ্যাপ ব্যবহার করে ক্রেতা গুগল স্ক্যানার ডাউনলোড করতে পারেন। সেটা করতে পারলে দূষণমুক্ত বাজি চেনার জন্য চোখ বুজে রাস্তার বিক্রেতা বা শুধুমাত্র লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিক্রেতাদের ওপর নির্ভর করতে হবে না।

crackers Diwali Utsav kolkata
Advertisment