নতুন ধুতি, পঞ্জাবি পরে সেজেগুজে মাথায় টোপর আর গলায় রজনীগন্ধার মালা ঝুলিয়ে বর এসেছিল বিয়ে করতে। কিন্তু, এ যাত্রায় আর তা হল না। ছাদনাতলায় পৌঁছতেই কনের বদলে দেখা মিলল উর্দিধারীদের। বাসর ঘরের বদলে বরের ঠাঁই হল শ্রীঘরে।
ঘটনা পূর্ব বর্ধমান জেলার শক্তিগড়ের নাদুর এলাকার। পুলিশ সূত্রে খবর, বর বাবাজীবন বিশ্বনাথ বিশ্বাসের বাড়ি বর্ধমান ২ ব্লকের শক্তিগড় থানার কুমিরকোলা এলাকায়। পাত্রীও একই ব্লকের বাসিন্দা। সমন্ধ করেই ঠিক হয়েছিল বিয়ে। সেই মতো স্থানীয় কলীমন্দিরে বৃহস্পতিবার বসেছিল বিয়ের আসর।
তৈরি ছিলেন দুই পরিবারের পুরোহিত থেকে অইন্যান্যরা। হাজির ছিলেন আমন্ত্রিতরাও। সন্ধ্যা হতেই বরবেশে হাজির হন বিশ্বনাথ বিশ্বাস। গোপনসত্রে এই খবর পেয়েই বিয়ে বাড়িতে হাজির হয় পুলিশ। ছাদনাতলায় দুই পরিবারের সদস্যদেরই জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা। এতেই জানা যায় যে, কনের বয়স বয়স ১৭ বছর, অর্থাৎ সে নাবালিকা। পাত্রী অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাঁকে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আর নাবালিকাকে বিয়ে করার অপরাধে পুলিশ বিয়ের আসর থেকেই বর বাবাজীবনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু হয় মামলা।
শুক্রবার গলায় রজনীগন্ধার মালা ঝোলানো ও ধুতি পঞ্জাবি পরিহিত বরকে বর্ধমান আদালতে পেশ করে পুলিশ। যদিও মেয়ের বিয়ে আটকানোয় অসন্তুষ্ট কনের বাড়ির লোকেরা।
এই ঘটনা শুনে বর্ধমান ২ নং ব্লক প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন যে, নাবালিকার বিয়ে দেওয়া ও নাবালিকাকে বিয়ে করা যে আইনত অপরাধ তা নিয়ে বহু প্রচার চালানো হয়েছে। প্রতিটি স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদেরও এই বিষয়ে সচেতন করা হয়। এমনকী নাবালিকার বিয়ে না দেওয়া নিয়ে ছাত্র ছাত্রীরাও নিজ নিজ এলাকায় সচেতনতা প্রচার চালায়। এত কিছুর পরেও কিছু পরিবার কী করে আইনকে বুড়ো আঙুল দেখানোর স্পর্ধা দেখান, সেটাই অবাক করা বিষয়। নাবালিকার বিয়ে রুখে দেওয়ার জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন শক্তিগড়ের বাসিন্দারা।