/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/20/dhakis-2025-09-20-12-20-57.jpg)
Durga Puja 2025: ঢাক বাজানোর মহড়ায় মহিলা ঢাকিরা।
Durga Puja: পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। অভাবকে সঙ্গী করেই কাটে দিন...তবে তা নিয়ে শুধু আক্ষেপ করে বসে থাকতে চাননি পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের বাঘাসন গ্রামের মহিলারা। তাঁরা উপার্জনের দাগিদে কাঁধে তুলে নিয়েছেন ঢাক। হাতে তুলে নিয়েছেন ঢাক বাজানোর কাঠি। সময় গড়ানোর সাথে সাথে তাঁরা ভাল ঢাক বাজিয়ে হিসাবে সুনামও কুড়িয়েছেন। ঢাকের বাদ্যিতে এই বছরেও পুজো মণ্ডপ মাতাতে এই মহিলা ঢাকিরা এখন নিয়ম করে মহড়া দিচ্ছেন।
মন্তেশ্বর ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম বাঘাসন ও মামুদপুর। এই গ্রামগুলির বেশিরভাগ মানুষই কৃষিজীবী। বেঁচে থাকার রসদ জোগাড়ের জন্য বছর ৭-৮ আগে এই গ্রাম গুলির গরিব পরিবারের ১২-১৫ জন মহিলা প্রথমে কাঁধে তুলে নেন ঢাক। তাঁদের কারও স্বামী দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন, আবার কারও স্বামী অসুস্থতার কারণে শয্যাশায়ী।
এমন পরিস্থিতিতে এই সব মহিলাদেরকেই তাঁদের সংসারের যাবতীয় দায় কাঁধে তুলে নিতে হয়। কিন্তু সংসার চালানোর জন্য রোজগারের সম্মানজনক কোনও পথ তাঁরা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। শেষমেষ তাঁরা ঢাক কাঁধে তুলে নিতে বাধ্য হন। দুর্গা মায়ের পুজোয় ঢাক বাজিয়ে তাঁরা যে উপার্জন করেন, তা দিয়ে একটু হলেও তাঁদের সংসারে সুখের দিন ফেরে বলে মহিলারা জানিয়েছেন।
বাঘাসনের মহিলা ঢাকি দলের সদস্য পূর্ণিমা দাস জানান, ঢাক বাজিয়ে রোজগার করার সিদ্ধান্ত তাঁরা বছর সাতেক নেন। তাঁদের উদ্দেশ্যের কথা জেনে এলাকার দুই অভিজ্ঞ ঢাকি পিন্টু দাস ও সুদেব দাস তাঁদের প্রশিক্ষণ দেন। ওঁদের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়েই তাঁরা ভালো ঢাক বাজানো রপ্ত করেন।
House Collapse:হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল আস্ত বাড়ি, লাগাতার বৃষ্টিতে ভয়াবহ বিপর্যয়!
এরপর গড়ে তোলেন ‘মা অন্নপূর্ণা’ নামে একটি মহিলা ঢাকির দল। দলীয় পোশাক হিসেবে তারা নির্ধারণ করেন লাল পাড় যুক্ত বাসন্তী রাঙা শাড়ি এবং লাল রঙের ব্লাউজ। পূর্ণিমাদেবী জানান, তাঁদের 'মা অন্নপূর্ণা' ঢাকির দলে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা সবাই এখন ঢাক বাজিয়েই স্বনির্ভর হতে চাইছেন। তা দেখে অন্য গ্রামের মহিলাও আকৃষ্ট হন। এলাকার মামুদপুর গ্রামের মহিলারাও ঢাক বাজানোকে পেশ হিসাবে গ্রহন করে আলাদা ঢাকি দল তৈরি করেন।
পুজোর আগেই নয়া আতঙ্ক, হুহু করে ছড়াচ্ছে ‘মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবা’র সংক্রমণ, ১৯ জনের মৃত্যুতে তোলপাড়
'মা অন্নপূর্ণা’ ঢাকি দলের অপর দুই সদস্য নবানী দাস, রিঙ্কু দাসরা জানান, বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গোৎসব। এই দুর্গোৎসব ছাড়াও কালী পুজো, সরস্বতী পুজো ও লক্ষ্মীপূজোতেও তাঁরা ঢাক বাজাতে যান। এছাড়াও ডাক পেলে অন্য পুজো পার্বণেও তাঁদের দলের সদস্যরা ঢাক বাজাতে যান। বছরের বাকি দিনগুলিতে সংসারের অভাব মেটাতে তারা মাঠে খেতমজুরের কাজ করেন।
Bomb threat: দিল্লির DPS-সহ একাধিক স্কুলে বোমা বিস্ফোরণের হুমকি, চূড়ান্ত সতর্কতায় বিরট পদক্ষেপ
মহিলা ঢাকি নবানী দাসের কথায়, "আমাদের মহিলা ঢাকি দলের সদস্যরা কলকাতা ও ব্যারাকপুর সহ ভিন জেলার বড় বড় পুজোয় ঢাক বাজিয়েছেন। আগের বছরগুলোতে দুর্গাপুজোর চারটি দিন ঢাক বাজিয়ে ভালো উপার্জন হওয়ায় আমাদের মহিলা ঢাকি দলের সদস্যদের পরিবারের সকলের মুখে হাসি ফুটেছিল।" দুর্গা মায়ের কৃপায় এই বছরেও ভাগ্য সহায় হবে বলে আশাবাদী 'মা অন্নপূর্ণা' ঢাকি দলের সকল মহিলা সদস্যরা। একই আশায় বুক বেধে আছেন,মামুদপুর গ্রামের মহিলা ঢাকিরা।