স্কুলবাড়ি না ভূতের বাড়ি এক ঝলকে দেখলে বোঝা কঠিন হতে পারে! ভাঙাচোরা এই বিল্ডিংয়েই কোনওমতে টিমটিম করে জ্বলছে লেখাপড়ার বাতি! স্কুলের একজন মাত্র শিক্ষক ও এক শিক্ষিকা। অসুস্থতাজনিত কারণে বর্তমানে দু'জনেই স্কুলমুখো হন না। শিকেয় উঠলেও কোনও মতে এই স্কুলে এখন চলছে লেখাপড়া। হাতেগোনা কয়েকজন পড়ুয়াকে পড়াশোনা শেখানো হচ্ছে। কারা এই গুরুদায়িত্ব তুলে নিলেন কাঁধে?
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর ১ নম্বর ব্লক। এখানকার রাজাপুর করাবেগ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ঝিকরা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। দীর্ঘদিন ধরেই স্কুলটির বেহাল দশা। স্কুলের শ্রেণিকক্ষ-সহ গোটা বিল্ডিংটা দেখলে মনে হবে ভূতুড়ে বাড়ি। দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে স্কুল বিল্ডিং। এই স্কুলে কেবলমাত্র একজন শিক্ষক ও একজন শিক্ষিকা। তবে বর্তমানে দু'জনেই নাকি অসুস্থ। স্কুলে আসতে পারেন না তাঁরা।
তাঁদের বদলে স্কুলের বাচ্চাদের এখন লেখাপড়া শেখান সনাতন হালদার ও তাঁর স্ত্রী সরস্বতী নাইয়া। এই দম্পতি আবার স্কুলের স্থায়ী শিক্ষিকা (বর্তমানে যিনি অসুস্থ বলে স্কুলে আসতে পারেন না) বাসন্তী বালা হালদারের পুত্র ও পুত্রবধূ। এরা দু'জনেই এখন স্কুলে শিক্ষকতা করেন। অভিভাবকদের দাবি, স্কুলে আগে প্রায় ৩০০ জন ছাত্রছাত্রী ছিল। তবে বর্তমানে সংখ্যাটা ২৫ থেকে ৩০-এ এসে ঠেকেছে। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে স্কুলের এই বেহাল পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানো হয়েছে। তবে তাতেও কোনও সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন- Premium: নবাবের নাছোড় প্রেমেই বাংলার এপ্রান্তে এই সবজির চাষ শুরু, ঈর্ষায় জ্বলতেন বেগমরাও!
গত দু'বছর ধরে বর্তমান শিক্ষিকা বাসন্তী বালা হালদারের পুত্র ও পুত্রবধূ স্কুলে ক্লাস নিচ্ছেন। এই স্কুলে মিড ডে মিলের রান্নার কাজে নিযুক্ত কর্মচারীরা ঠিক সময় বেতন পান না। তাই তাঁরাও কাজ চালিয়ে যেতে বেঁকে বসেছেন।
স্কুল পরিদর্শক কৃষ্ণেন্দু ঘোষের কথায়, "বর্তমানে স্কুলে একজন শিক্ষক ও শিক্ষিকা নিযুক্ত থাকলেও দু'জনেই অসুস্থ হওয়ার কারণে মাঝে মধ্যে স্কুলে আসেন। স্কুলে একজন প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি স্কুলে আসেননি। নতুনভাবে আবার শিক্ষক নিয়োগ করা হবে এই স্কুলে। আশা করি এবার সমস্যার সমাধান হবে।"