গতকালই প্রকাশিত এবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল। এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হার ৮৬.৬ শতাংশ। সাফল্যের হারে এবারও শহরকে টেক্কা জেলার। তার মাঝেই সকলের জনর কেড়েছে মুর্শিদাবাদের গড্ডা গণপতি আদর্শ বিদ্যাপিঠের ছাত্র- মহঃ আলম রহমান। আলমের হাত দুটো সম্পূর্ণরূপে অকেজো। পা দুটোও ঠিকঠাক কাজ করে না। স্রেফ ইচ্ছা শক্তির সাহায্যেই আলম ছুঁয়েছে সাফল্যকে। জীবনের প্রথম পরীক্ষায় প্রতিবন্ধী আলমের নম্বর চমকে ওঠার মতই।
বাংলায়- ৯১, ইংরেজিতে- ৮৬, অঙ্কে- ৯৮, ভৌতবিজ্ঞানে- ৯৪, জীবন বিজ্ঞানে- ৭৭ এবং ইতিহাস ও ভূগোলে যথাক্রমে ৮৪ ও ৯৫ পেয়ে মোট ৬২৫ নম্বর নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে আলম। তার এই সাফল্যে খুশি পরিবার থেকে পাড়া প্রতিবেশীও। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা, কয়েকটা দিন বেশ মনমরা ছিল আলম রেজাল্টের চিন্তায়। কি হবে এই ভেবেই রাতের ঘুম উড়েছিল।
পা দিয়ে লিখেই পরীক্ষা দিয়েছেন আলম। রেজাল্টের খবর প্রকাশিত হতেই বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাস আর চোখে জল আলমের। তার এই খুশিতে চোখের কোনে জল পরিবার থেকে পাড়া প্রতিবেশীর। ইচ্ছা আর জেদ দিয়ে যে জীবনের কঠিন যুদ্ধকেও হার মানানো যায় তার জলজ্যান্ত নিদর্শন স্থাপন করেছে এই কিশোর।
আরও পড়ুন- দীর্ঘ যুদ্ধের ইতি, শিক্ষিকার পদে যোগ দিলেন সোমা, আন্দোলনকারীদের প্রতি কী বার্তা?
আগামী দিনেও প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে এভাবেই জীবনে এগিয়ে যেতে চায় আলম। প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে জীবনের বড় পরীক্ষায় ৯০ শতাংশ নম্বর পাওয়া আলমের এহেন কৃতিত্বে খুশি মা আলম আরা বেগম।
তার কথায়, ‘ছোট থেকেই পড়াশুনার প্রতি আলমের ভীষণ আগ্রহ। হাত-পা অকেজো হওয়া সত্ত্বেও পা দিয়ে কোনমতে লিখে পরীক্ষা দিয়েছে আলম। ওর এই সাফল্যে আমারা সকলে খুশি’।
অভাবের সংসার আলমের। বাবার ছোট মুদি দোকান। মা গৃহবধূ। আলমের দুই বোন। দাদার সাফল্যে খুশি তারাও। আলম জানিয়েছে আগামী দিনে বিজ্ঞান শাখায় উচ্চমাধ্যমিক পড়তে চায় সে। ভবিষ্যতে মহাকাশ বিজ্ঞানী হতে চায় আলম । তবে পরিবারের চিন্তা, আর্থিক অনটনের কারণে আলমের স্বপ্ন সফল হবে তো!