হাঁসখালি ধর্ষণ এবং খুন কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আজ, বুধবারই হাঁসখালিতে যাওয়ার কথা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থআর গোয়েন্দাদের। দিল্লি থেকে সিবিআইয়ের একটি বড় দল আসছে বাংলায়। এক সঙ্গে বেশ কয়েকটি তদন্তভার সিবিআইয়ের কাঁধে রয়েছে। তাই দ্রুত তদন্তের নিষ্পত্তির জন্য আরও আধিকারিক আসছেন।
প্রসঙ্গত, হাঁসখালি কাণ্ডে পুলিশি তদন্তে একাধিক খামতির কথা উল্লেখ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। মৃতার পরিবার এবং স্থানীয়দের আস্থা ফেরাতে নাবালিকার গণধর্ষণ এবং খুনের মামলায় গতকালই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। নির্যাতিতার পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তদন্তের স্টেটাস রিপোর্ট ২ মে হাইকোর্টে জমা দেবে সিবিআই।
উল্লেখ্য, রামপুরহাটের বগটুই গণহত্যা মামলা, ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর খুন মামলায় সিবিআইকে তদন্তভার দিয়েছে উচ্চ আদালত। কাউন্সিলর খুনের প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈষ্ণবের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্তও সিবিআইকে দিয়েছে হাইকোর্ট। এবার হাঁসখালিতে নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের মামলাতেও কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার উপরেই ভরসা হাইকোর্টের। আদালতের নজারদারিতে হাঁসখালির ঘটনার তদন্ত করবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এদিন এমনই নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের।
আরও পড়ুন হাঁসখালিতে নাবালিকা ‘ধর্ষণ’ ও ‘খুন’: CBI তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
সোমবারই হাঁসখালি ধর্ষণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য ঘিরে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়। হাঁসখালির নির্যাতিতার সঙ্গে অভিযুক্তের প্রেমের সম্পর্ক ছিল কিনা সেই জল্পনাই উস্কে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ দায়ের নিয়েও নানা প্রশ্ন তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি খুন নাকি ধর্ষণ নাকি লাভ অ্যাফেয়ার তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। ছেলেটির নাকি মেয়েটির লাভ অ্যাফেয়ার্স ছিল। ইজ ইট আ ফ্যাক্ট?’
নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ দায়ের নিয়ে প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত ৫ তারিখে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি জানানো হচ্ছে ১০ তারিখে। কেন? দেহ সৎকার হল কেন? তাহলে তো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া সম্ভব নয়। এটা কি উত্তরপ্রদেশ যে আমরা লাভ জেহাদ নিয়ে আলোচনা বসাব? এটা বাংলা। গ্রেফতার করা হয়েছে। কোনওরকম রং না দেখেই গ্রেফতার করা হয়েছে।’
হাঁসখালির ঘটনায় তদন্ত শেষের আগেই মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য ঘিরে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিরোধীরা তো বটেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে সরব হন বিশিষ্টদের একাংশও। পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, অভিনেতা ঋদ্ধি সেনরা মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের সমালোচনা করেন।