Advertisment

Happy Holi 2024: দোল পূর্ণিমায় রঙের উৎসবে বাংলার এতল্লাট সামিল হয় না, এপ্রান্ত রঙিন হয় কবে জানেন?

Happy Holi 2024 Wishes in Bengali: রঙের উৎসবে মাতোয়ারা গোটা বাংলা। বাংলার কোণায় কোণায় পালিত হচ্ছে রঙের উৎসব। উৎসবের আনন্দে মাতোয়ারা ৮ থেকে ৮০। সাবেকি রীতি মেনেই দোল পূর্ণিমার দিন রঙের উৎসবে সামিল হয় না বাংলার এতল্লাট।

IE Bangla Web Desk এবং Nilotpal Sil
New Update
Happy Holi 2024 Wishes in Bengali Burdwan Dol Celebration

দেবী সর্বমঙ্গলা।

Happy Holi 2024 Wishes in Bengali: দোল উৎসবে মাতোয়ারা বাংলা। রঙের উৎসবে মেতেছে বঙ্গবাসী। তবে সুপ্রাচীন ঐতিহ্য মেনে এই দিনটিতে আবিরের রঙে রাঙা হন না রাঢ়বঙ্গের অন্যতম প্রাচীন নগর বর্ধমানের (Burdwan) বাসিন্দারা। এখানে দোল উৎসব (Dol Utsav) পালিত হয় দোল পূর্ণিমার পরের দিন। রাজা না থাকলেও শতাব্দী প্রাচীন কাল ধরে রাজরীতি মেনে এ ভাবেই রঙের উৎসব পালন করে চলেছেন বর্ধমানবাসী।

Advertisment

একই রকম ভাবে সাবেকী রীতিমেনে এই বর্ধমান জেলার জামালপুর (Jamalpur) ব্লকের ’রাধাবল্লভবাটি’ মৌজার বাসিন্দারাও এদিন আবিরের রঙে রাঙা হলেন না। তাঁরাও দোল পূর্ণিমার পরদিন ’জোড়া রাধাবল্লভের’ দোলে আবিরের রঙে রাঙা হবেন।

দোল পূর্ণিমার (Dol Purnima) দিন বর্ধমানবাসীর রঙের উৎসবে মাতোয়ারা না হওয়ার পিছনেও রয়েছে দেবতাদের প্রতি ভক্তির কাহিনী।কথিত আছে বর্ধমানের মহারাজা বিজয় চাঁদ মহতাব এই প্রথা চালু করেন। প্রথম দিন অর্থাৎ দোল পূর্ণিমার দিনটি বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মা সর্বমঙ্গলা দেবীর দোল। এও কথিত আছে বর্ধমানে দোল পূর্ণিমা তিথিটি হল ঠাকুর ’দেবতার দোল’ উৎসবের দিন। সেদিন শুধুমাত্র দেব-দেবীর রাঙা চরণ আবির ও কুমকুমে চর্চিত হয়। সেই উপলক্ষে রাজবাড়ির অন্দর মহলে দোল খেলা হয়ে থাকে। পরের দিন অনুষ্ঠিত হবে মানব সাধারণের রঙের উৎসব। সেই রীতির আজও সার্থক উত্তরাধিকারী বর্ধমানের মানুষ । তাই ঐতিহ্য মেনে দোল পূর্ণিমা তিথিতে শুধুই বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্ব্বমঙ্গলার বাড়িতে দোল উৎসব পালিত হল।

আরও পড়ুন- Lok Sabha Polls 2024: তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে একমঞ্চে CPIM প্রার্থী! একদা লালদুর্গ বর্ধমানে হইচই!

একই রকম ঐতিহ্য মেনে দোল উৎসবের পরদিন ’জোড়া রাধাবল্লভের’ দোল উৎসবে মাতোয়ারা হন জামালপুরের রাধাবল্লভবাটি মৌজা এলাকার বাসিন্দারা। দীর্ঘ প্রায় চারশো বছর ধরে জোড়া রাধাবল্লভ পূজিত হয়ে আসছেন জামালপুরের রায় পরিবারের মন্দিরে। তাই দোল পূর্ণিমা তিথি শেষে হোলিতে রাধাবল্লভের চরণে আবির দিয়ে তারপর বিকেলে রঙের উৎসবে মাতোয়ারা হবেন জামালপুরবাসী। মন্দির প্রাঙ্গণে মেলা বসে গিয়েছে। জোড়া রাধাবল্লভের পুজো দেখতে আশপাশের এলাকার বহু মানুষের ভিড়ও মন্দির প্রাঙ্গণে উপচে পড়ে। পূর্ব বর্ধমান জেলায় আজও অন্যতম ঐতিহ্যের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে জোড়া রাধাবল্লভের দোল উৎসব ।

জোড়া রাধাবল্লভের দোল উৎসব নিয়ে প্রচলিত রয়েছে নানা লোককথা। জামালপুরের রায় পরিবারের সদস্য প্রশান্ত কুমার রায় জানালেন, তাঁদের পূর্ব পুরুষরা ছিলেন রাজপুত। প্রায় চারশো বছর আগে রাজস্থান থেকে বর্ধমানে বাণিজ্য করতে এসেছিলেন তাঁদের রাজপুত সিংহ বংশিয় এক পূর্বপুরুষ। বর্ধমান জেলার জামালপুরে তিনি আস্তানা গাড়েন। শত্রু আক্রমণ ঠেকাতে ’গড়’ কাটা হয় আস্তানার চারপাশ জুড়ে। সেই গড় কাটার সময় মাটি থেকে উদ্ধার হয় রাধাকৃষ্ণের অষ্টধাতুর একটি মূর্তি। রাধাকৃষ্ণ মূর্তিটি রাজপুত পরিবারের কাছে রাধাবল্লভ নামে পরিচিতি পায়।

আরও পড়ুন- Barrackpur-Arjun Singh: বারাকপুরে অর্জুনেই অগাধ আস্থা মোদী-শাহদের! টিকিট পেয়েই তীব্র হুঙ্কার বাহুবলী রাজনীতিবিদের

আস্তানা এলাকায় ছোট্ট একটি মন্দির গড়ে রাধাবল্লভের মূর্তির পুজোপাঠ শুরু করে রাজপুত পরিবার। সেই সমসাময়িক কালেই কোনও এক বৈষ্ণব সাধক ওই মন্দিরের সামনে কষ্টিপাথরের কৃষ্ণ মূর্তি এবং অষ্ট ধাতুর রাধা মূর্তি ফেলে রেখে দিয়ে চলে যান। সেই থেকে দোল উৎসবের পরদিন প্রতিপদ তিথিতে জোড়া রাধাবল্লভের মূর্তির পুজোপাঠ হয়ে আসছে রাধাবল্লভ মন্দিরে।

আরও পড়ুন- Sundarban: আত্মারাম খাঁচাছাড়া পর্যটকদের! সুন্দরবনে একেবারে বাঘের মুখোমুখি পর্যটকরা! তারপর?

প্রশান্ত রায় আরও জানান, পূর্বতন বর্ধমান মহারাজা জামালপুরের কয়েকটি মৌজা এলাকার জমিদারি দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছিল তাদের পূর্ব পুরুষদের। সেই সময়েই রাধাবল্লভকে স্মরণ করে এখানকার জমিদারি মৌজা রাধাবল্লভবাটি মৌজা নামে পরিচিতি পায় । বর্ধমান মহারাজা কর্তৃক রায় উপাধিতে ভূষিত হয় রাজস্থান থেকে জামালপুরে আস্তানা গাড়া সিংহ পরিবার। ভক্তিতে ভর করেই জোড়া রাধাবল্লভের দোল উৎসবের দিনেই রঙের উৎসবে মাতেন জামালপুরের রাধাবল্লভবাটি মৌজার বাসিন্দারা।

burdwan Purba Bardhaman Dol Utsav 2024
Advertisment