বাড়ি থেকে উদ্ধার হেয়ার স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ। পূর্ব বর্ধমানের মেমারির দেবীপুরের ঘটনা। মৃত শিক্ষকের নাম সুনীল কুমার দাস (৬৩)। পরিবারের তরফে অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী থেকে শিক্ষারত্ন সম্মান পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অবসরের তিন বছর পার হলেও পেনশন পাচ্ছিলেন না তিনি। বার বার সংশ্লিষ্ট কত্রৃপক্ষকে জানিয়েও লাভ হয়নি। পেনশন না মেলায় আর্থিক কষ্টে দিন কাটচ্ছিল অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের। অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত চরম পরিণতিকেই বেছে নিয়েছেন কলকাতার নামজাদা স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
মেমারী থানার পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে।
শিক্ষামনন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছেন, 'খুবই দুঃখজনক ঘটনা। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের আপদকালীন পেনশন ২০২১ সালের জানুয়ারিতে চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তাসত্ত্বেও কেন তিনি পাচ্ছিলেন না, কোতায় বিষয়টি আটকাল তা খতিয়ে দেখতে অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি গঠন করা হল। দ্রুত এই কমিটি রিপোর্ট দিলে পুরোটা বোঝা যাবে।'
এদিকে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকের মৃত্যু ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছে। তৃণমূল সরকারকে দুষছে বিরোধী দলগুলি। বিজেপির তরফে রাহুল সিনহা বলেছেন, 'সবকিছুতেই কাট মানি জড়িত। এক শিক্ষক অবসরের পর পেনশন পাচ্ছিলেন না কারণ তিনি হয়তো কাট মানি দিতে চাননি তাই। বাংলার তরম সর্বনাশ করছে মমতা সরকার। এক প্রবীণ ব্যক্তি মাসের পর মাস বিকাশ ভবন যেতেন। কিন্তু কাজের কাজ হত না। পেনশন আটকেই ছিল। সেই অপমান হয়তো তিনি আর সহ্য করতে পারেননি। তাই আত্মহত্যা পথ বেছে নিয়েছেন।'
পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, 'কেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তিন বছরের বেশি পেনশন পাননি বা কেন তিনি আত্মহত্যা করলেন তা তদন্ত সাপেক্ষ, প্রশাসন খতিয়ে দেখবে। এই ঘটনাকে নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। মমতা ব্যানার্জী শিক্ষকদের সহযোগিতায় সবসময় পাশে রয়েছেন।'
হেয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন অবস্থায় সুনীল কুমার দাস ২০১৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় তাঁর হাতে 'শিক্ষারত্ন' পুরস্কার পান। ওই বছরই সেপ্টেম্বরের শেষ দিন তিনি অবসর নিয়েছিলেন। অবসরের পর সুনীলবাবু কোনও পেনশন পাননি। বিকাশ ভবন, হেয়ার স্কুলে গিয়ে বহু দরবারেও কাজ না হওয়ায় সুনীল দাস হতাশ হয়ে পড়েছিলেন।