সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে বঙ্গ বিজেপিতে ক্ষোভ বাড়ছে। বাঁকুড়ার পর এবার বনগাঁ। বনগাঁ জেলায় মণ্ডল স্তরের সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে এবার ক্ষোভ প্রকাশ করে দীর্ঘ ফেসবুক পোস্ট করলেন হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক ও মতুয়া নেতা অসীম সরকার। ভবিষ্যতে এ রাজ্যে বিজেপির বিস্তার নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
অসীম সরকারের নিশানায় বনগার দলীয় সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। ফেসবুক পোস্টে তাঁর বিশ্বাসভঙ্গের কথা লিখেছেন এই মতুয়া বিধায়ক।
কী লিখেছেন অসীম সরকার?
'দেবদাস দা জেলা সভাপতি হওয়ার পর জেলা কমিটি গঠন করার সঙ্গে সঙ্গেই একবার বাতাস খারাপ হতে দেখছিলাম।
তার পরে মাননীয় সুব্রত ঠাকুর মহাশয় আমাকে বললেন মন্ত্রী মহাশয় (মাননীয় শান্তনু ঠাকুর) বাড়িতে এলে 27/09/23 তারিখ আমাদের পাঁচজন এম এল এ দের নিয়ে এক সঙ্গে ঠাকুর বাড়িতে বসে বৈঠকের পর সর্ব্ব সম্মতিক্রমে মন্ডল সভাপতি নির্ধারণ করা হবে।
সবাইকে আমি সেই কথাই বলে বলে দিয়েছিলাম।
ওমা----হটাৎ করে কারো সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই,, মন্ডল সভাপতিদের লিষ্ট বেরিয়ে গেলো?
ব্যাপার টা আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।
এখন দেখছি চারিদিক থেকে প্রকৃত লড়াখু বিজেপি কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ভীষণ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশও ফেসবুক প্রোফাইলেও দেখতে পাচ্ছি।
আমি মাননীয় সুব্রত ঠাকুর মহাশয়কে ফোন করে বিষয়টা জানতে চাইলাম।'
এরপরই নিজের বেদনার কথা পোস্টে তুলে ধরেছেন হরিণঘাটার বিধায়ক। অসীম সরকার লিখেছেন, 'বড় ঠাকুর মহাশয় বললেন---
আর বসাবসি কিসের?
যা যা হবার তা তো হয়েই গেছে।
আমাদের এম এল এ দের তো এক পয়সাও মূল্য ওরা দিলো না।
আমি হরিনঘাটার জনগনের কাছে বলছি--- দেখুন আমি একজন কবি মানুষ।
উদ্বাস্তদের নাগরিকত্ব সুরক্ষার জন্য এই রাজনীতিতে এসে আপনাদের আশীর্বাদে এম এল এও হয়েছি।
এই সব দেখে টেকে আমার আর ভালো লাগছে না।
জানিনা এর ফলাফল ভবিষ্যতে কতদূর গড়াবে।
আমার কেউকে কিছু বলার আর ভাষা নাই।
দেবদাস দা আমাকে কথা দিয়ে বলেছিলেন---
জেলা কমিটি এবং মন্ডল কমিটি অবশ্যই লোকাল এম এল এ দের পূর্ণ মতামত নিয়েই করবেন।
সেই দেবদাস দা এই ভাবে কথা নষ্ট করবেন আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারছি না।
তবে আমি সবার হাতে পায়ে ধরে বলছি ঠাকুর মহাশয়কে জয় লাভ করাবার জন্য আমাদের অন্তর্দন্দ মিটিয়ে নেওয়া ভালো। '
অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটানোর কথা বললেও হুঁশিয়ারিও রয়েছে বিধায়কের পোস্টে। লিখেছেন, 'তবে এটাও বলে রাখছি---
শক্তি না দেখালে কেউ করে নাকো ভয়।
তোমরা বিজেপিতে থেকেই তোমাদের শক্তির প্রমাণ দাও।
মূলত কাদের সঙ্গে জনগন আছে, আর কাদের সঙ্গে জনগন নেই।
জয়হরিবোল।
চারিদিক থেকে শত শত ফোন আসছে, আমি কারো প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারছি না।'
অসীম সরকারের ক্ষোভের পোস্ট প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, 'এটা আমাদের মত দলে অনভইপ্রেত। অস্বস্তি বাড়ছে। অসীম দা কবি মানুষ, সরল মনের মানুষ। তাই ফেসবুকে লিখেছেন মনের কথা। তবে, না বললেই ভাল হত। ওনার বক্তব্য নিশ্চই দলে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। আশা করব পরে দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে তিনি এসব আর বলবেন না।'
আরও পড়ুন- আর শুধু কথার কথা নয়, অভিষেকের অফিসের সামনে মিছিলে এবার পাশাপাশি শুভেন্দু-কৌস্তভ