‘তিন চাকার গল্প’ বলবে হাজরা পার্ক। এবারের অভিনব থিম নজর কাড়বেই। প্রতি বছর হাজরা পার্ক দুর্গোৎসব নতুন নতুন থিম ভাবনাকে সামনে নিয়ে এসে দর্শনার্থীদের অবাক করে দেয়। এবারেও তার ব্যতিক্রম নেই। দক্ষিণ কলকাতার এই প্রাচীন পুজো এবার একটি নজরকাড়া থিম নিয়ে এসেছে। 'তিন চাকার গল্প' বলবে হাজরা পার্ক দুর্গোৎসব। চলতি বছরে ৮১ তে পা দিল দক্ষিণ কলকাতার এই নজরকাড়া পুজো। সমাজ জীবনে অটোরিকশা এবং সেই অটোচালকদের গল্প বলতেই "তিন চাকার গল্প" থিম নিয়ে হাজির হাজরা পার্ক।
থিম প্রসঙ্গে হাজরা পার্ক দুর্গোৎসব কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শ্রী সায়ন দেব চ্যাটার্জি বলেন, "কলকাতা আনন্দের শহর, যা অতীতে কিছুটা সহজ-সরল ছিল, কিন্তু যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য বর্তমানে পরিবর্তনশীল এবং ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে এই শহর। এইভাবে আমরা এখন আমাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে দ্রুত গতির শহরে বাস করছি এবং আমরা পিছিয়ে যেতে শিখিনি। অটোরিকশা চালকরা কখনও বাবা, কখনও স্বামী বা পুত্র হিসাবে বিভিন্ন ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি নিজেদের পেশাগত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করছে এই তিন চাকার একটি অটোরিকশা চালক হিসেবে। তারা দিনরাত পরিশ্রম করে খুব অল্প পরিমাণ উপার্জন করে, কিন্তু তারা জানে কিভাবে তাদের পরিবারকে নিজের যা কিছু আছে তা দিয়ে খুশি রাখতে হয়। প্রতি রাতে, ছেঁড়া কম্বলে ঘুমোনোর সময় তারা কোনও দিন লাখ টাকা উপার্জনের স্বপ্ন থেকে নিজেদের বিরত রাখতে পারে না। কাজেই তারাও চায় নিজেদের উপার্জনকে ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে তুলতে"।
আমাদের মধ্যে অটো চালকদের প্রতি আজও সমাজে এক নেতিবাচক ভাবনা রয়েছে। কিন্তু আমরা কখনই তাদের দৈনন্দিন সংগ্রাম, অসুবিধা, তাদের পারিবারিক জীবন, তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং স্বপ্ন সম্পর্কে জানতে চাই না। সে কথা উল্লেখ করে সায়নদেব বলেন, “মণ্ডপটির চারপাশে ঘরবাড়ি সহ অটোর যন্ত্রাংশ দিয়ে একটি অটো স্ট্যান্ড গড়ে তোলা হয়েছে। যেখানে বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে একজন অটো চালক কিভাবে একে অপরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পেশায় টিকে থাকেন। আমরা তাদের মানবিক দিকটিও উপস্থাপন করছি, কিভাবে তারা ২৪x৭ সময় কাজ করে তাদের পরিবারকে ভরণ- পোষনের জন্য। এইভাবে তারা পিতা, স্বামী বা পুত্র হিসাবে বিভিন্ন ভূমিকা পালন করার চেষ্টা করে নিজেদের পরিবারে। যদিও তাদের প্রতিদিনের উপার্জন সামান্য, তবুও তারা তাদের পরিবারকে সুখী রাখার চেষ্টা করে এবং তাদের সন্তানদের সুশিক্ষার জন্য যা যা করতে পারে তা ব্যয় করে। আমরা ভয়েস-ওভারে তাদের গল্পগুলিও চিত্রায়িত করেছি”।