অবশেষে নীলরতন সরকার হাসপাতালে কুকুর নিধন কাণ্ডে জড়িত দুই ছাত্রীকে দু'মাসের জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশ মেনে সাসপেন্ড করলেন কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়া চলাকালীন মৌটুসি মণ্ডল এবং সোমা বর্মণ কীভাবে ক্লাস করছিলেন, তা নিয়ে সরব হয়েছিলেন শহরের পশুপ্রেমিরা। এ নিয়ে আন্দোলনের জেরে পুলিশের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তি হয় পশুপ্রেমিদের, এমনকি আহত হয়ে হাসপাতালে পর্যন্ত ভর্তি হতে হয় কয়েকজনকে। এরপরই আসে স্বাস্থ্য দপ্তরের সিদ্ধান্ত, যতদিন তদন্ত চলছে ততদিন ওই দুই পড়ুয়া ক্লাস করতে পারবেন না।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ জানুয়ারি প্রকাশ্যে আসে এনআরএস-এর কুকুর নিধন কাণ্ড, যেসময় প্যাকেট বন্দী অবস্থায় পাওয়া যায় ১৬ টি কুকুর শাবকের দেহ। প্রাথমিক তদন্তের পর জানা যায়, নির্মমভাবে পিটিয়ে মারা হয়েছে তাদের। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ক্ষোভে ফেটে পড়ে শহর, বিশেষ করে শহরের পশুপ্রেমিরা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মানেকা গান্ধীর দপ্তর থেকেও ওই দুই ছাত্রীকে বরখাস্ত করার দাবীতে ফোন আসে এনআরএস কর্তৃপক্ষের কাছে।
আরও পড়ুন: কুকুর নিধন কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া পড়ুয়ারা ফিরলেন ক্লাসে, শহর জুড়ে ফের বিক্ষোভ
ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে আসে একটি কুকুর শাবককে পিটিয়ে মারার ভিডিও। জানানো হয়, হাসপাতালের নার্সিং হস্টেলের পিছন দিকে রেকর্ড করা হয়েছে ভিডিওটি। ভিডিওতে দেখা যায়, দুজন মহিলা কুকুরছানাটিকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারছেন। এরপর ১৫ জানুয়ারি গ্রেফতার হন মৌটুসি এবং সোমা। পরদিন আদালতে তোলা হলে জামিনে ছাড়াও পেয়ে যান তাঁরা। কিন্তু এতে ক্ষান্ত হন নি পশুপ্রেমিরা। তাঁদের দাবী ছিল, ওই দুজনকে ক্লাস করতে দেওয়া যাবে না, বহিষ্কার করতে হবে হাসপাতাল থেকে।
অন্যদিকে হাসপাতালের নার্সিং কর্মীদের পক্ষ থেকে হাসপাতাল চত্বর 'কুকুর মুক্ত' করার দাবী ওঠে। অভিযোগ, কুকুরের কামড়ের শিকার হাসপাতালের রোগী থেকে শুরু করে আবাসিকরা। বস্তুত, বুধবার সকালেও অভিযোগ ওঠে, হাসপাতালের সুপারের ঘরের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময়ে রানি মল্লিক নামে বছর তিনেকের এক শিশুকে কামড়ে দেয় একটি কুকুর। সম্ভবত তার জেরেই আজ কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে হাসপাতালে 'কুকুর ধরার' কাজ শুরু হয়। পাঁচটি গাড়িতে মোট ১৭টি কুকুর তোলা হয় গাড়িতে। কুকুরগুলিকে নির্বীজকরণের পর এক সপ্তাহ বাদে ফের হাসপাতালে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুরসভা কর্তৃপক্ষ।