করোনা! এই আতঙ্কে ছেয়ে গিয়েছে বাংলা। কেউ আক্রান্ত হলেই, তাঁর ধারেকাছে ঘেঁষতে বুক কাঁপছে বঙ্গবাসীর। এমন কঠিন সময়ে ডাক্তার-নার্সদের মতো করোনা রোগীদের সেবায় নিবেদিত প্রাণ ওঁদেরও। কোভিড ১৯-এর পরোয়া না করেই ওঁরাও প্রতি মুহূর্তে লড়াই চালাচ্ছেন 'অদৃশ্য় শত্রু'র বিরুদ্ধে। ওঁদের কেউ হাসপাতালের ক্লিনিং স্টাফ, আবার কেউ ফ্রন্টডেস্কের কর্মী। ডাক্তার-নার্সদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিঃশব্দে অতিমারীকে চ্য়ালেঞ্জ জানিয়ে নিষ্ঠা সহকারে নিজেদের কর্তব্য় পালন করে চলেছেন বাংলার এই 'নীরব যোদ্ধারা'।
এ রাজ্য়ে করোনা সংক্রমণ তখন সবে থাবা বসিয়েছে, সেসময়ই চাকরি খুইয়ে একেবারে দিশেহারা অবস্থা হয় বছর ছত্রিশের অজিত তুরির। শেষে পেট চালাতে শহরের প্রথম কোভিড হাসপাতাল বেলেঘাটা আইডি-তে ক্লিনিং স্টাফ হিসেবে পথচলা শুরু করলেন অজিত। ৮ ঘণ্টার শিফটে সপ্তাহে ৭ দিন হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ড সাফ-সাফাইয়ের কাজে গত ৬ মাস ধরে নিজেকে উজার করে দিয়েছেন অজিত।
আরও পড়ুন: বাংলায় করোনায় সুস্থতার হার ৮০ শতাংশ পার, মৃতের সংখ্য়া ছাড়াল ৩ হাজার
তাঁর কথায়, ''করোনাভাইরাস শুনলেই লোকে পালায়, কিন্তু কাউকে তো এই কাজ করতে হবে। যখন আমি চাকরি হারালাম,ভেবেছিলাম না খেতে পেয়ে পরিবার মারা যাবে...স্ত্রীকে বলেছিলাম, এ কাজটা করব, কারণ লকডাউনে খাওয়ার টাকা ছিল না। তারপর ভগবানের উপর ছেড়ে দিয়েছি সবটা। রোজ যখন কোভিড ওয়ার্ডে ঢুকি, তার আগে ভগবানকে ডাকি...যখন বয়োজ্য়েষ্ঠ রোগীরা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান, তাঁরা আমাদের আশীর্বাদ করেন। আমরা সুস্থ আছি, ওঁদের আশীর্বাদের জন্য়ই''।
অজিতের মতোই কোবিড ওয়ার্ডে কাজ করছেন বছর উনত্রিশের রাহুল হেলা। তিনি বললেন, ''অনেক ডাক্তার-নার্সই করোনা রোগীর কাছে যেতে ভয় পান, কিন্তু ডা. যোগীরাজ রায় এমনটা করেন না। ওঁর থেকে অনেক কিছু শিখেছি''। মার্চ মাস থেকে লাগাতার কাজ করে চলেছেন রাহুলও। তাঁর কথায়, ''আমাকে করতেই হবে কাজটা, কারণ, যদি একদিন কামাই করি, তাহলে রোগীরা খাবার পাবেন না''।
করোনা-ভয়কে জয় করে একইরকম ভাবে নিজেদের কর্তব্য় পালন করে চলেছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্য়ালের কর্মী বিজয় মালিক ও কলকাতার উডল্য়ান্ডস হাসপাতালের ফ্রন্টডেস্কের কর্মী গৌরব চট্টোপাধ্য়ায়। যাঁরা দু'জনেই করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন