এক, দু'বার নয়। এই নিয়ে পঞ্চমবারের জন্য সুপ্রিম কোর্টে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলার শুনানি পিছিয়ে গেল। আপাতত মামলাটির শুনানি স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। ১১ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
২০২২ সালের মে মাসে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল- রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দিতে হবে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য সরকার। শীর্ষ আদালতে তাদের যুক্তি, হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক সরকারি কর্মী ও পেনশনভোগীদের ডিএ দিতে হলে প্রায় ৪১ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা খরচ হবে। আপাতত সেই বিপুল অর্থিক বোঝা রাজ্য সরকারের পক্ষে বহন করা অসম্ভব। এই বোঝা বইতে হলে একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ হয়ে য়েতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় নবান্নের তরফে। পাল্টা রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনের আইনজীবীর দাবি ছিল, ডিএ সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য অধিকার। আর্থিক বোঝা চাপবে বলে তা থেকে সরকারি কর্মীদের বঞ্চিত করা যায় না।
<আরও পড়ুন: বিরোধী জোটের সলতে পাকাতে আজই ওড়িশা সফরে মমতা, পুরীতে পুজো দিয়ে নবীন-সাক্ষাৎ>
গত বছর ডিসেম্বরে ডিএ মামলা সুপ্রি কোর্টে ওঠে। তার পর থেকেই এই মামলার নিষ্পত্তি শীর্ষ আদালতে বারবার পিছোচ্ছে। ৫ ডিসেম্বর প্রথম শুনানি পিছিয়ে হয় ১৪ ডিসেম্বর। এই মামলার শুনানির জন্য নতুন ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করা হয়। বিচারপতি হৃষীকেশ রায় এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে মামলা। কিন্তু শুনানির দিনই মামলাটি থেকে সরে দাঁড়ান বিচারপতি দত্ত। ফলে মামলার শুনানি হয়নি। এর পরে ১৬ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাজ্যের পেশ করা হলফনামায় ত্রুটি থাকায় ফের পিছয় শুনানি। ঠিক হয় ১৫ মার্চ শুনানি হবে। কিন্তু ওই দিন ‘আফটার নোটিস মিসলেনিয়াস ম্যাটার’ এই সংক্রান্ত সব মামলার শুনানি ২১ মার্চ পর্যন্ত পিছিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তার মধ্যে রাজ্যের ডিএ মামলাও ছিল। এদিন ফের পিছল এই মামলা।
কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-এর দাবিতে রাজ্য সরকারি কর্মীদের আন্দোলন ৫৬ দিনে পড়েছে। চলছে অনশন। সুপ্রিম কোর্টে ফের মামলা পিছনোয় আন্দোলনকারীদের অপেক্ষার প্রহর বাড়ল। তবে এতে হতাশায় ডুবতে নারাজ ডিএ আন্দোলনকারী যৌথ মঞ্চের সদস্যরা। যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, 'আমরা উদ্যম হারাচ্ছি না। হকের দাবি না মিটলে এরপর এপ্রিল থেকে আমরা লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করব। আন্দোলন চলবে এবং আরও তীব্রতর হবে।'