Advertisment

বর্ষনে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ, ধসে তছনছ দার্জিলিং, বন্যা পরিস্থিতি জলপাইগুড়িতে

পাহাড়ে বহু জায়গায় ধস নেমেছে। লন্ডভন্ড অবস্থা ৫৫ ও ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের। ফাটল দেখা দিয়েছে উত্তরবঙ্গের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সেতুতে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
heavy rain flood situation at darjeeling and jalpaiguri north bengal

প্রকৃতির রোষে উত্তরবঙ্গ। ছবি- সন্দীপ সরকার

টানা ৪৮ ঘন্টার প্রবল বর্ষনে বিপর্যস্ত পাহাড়-সমতল সহ উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কার্শিয়াং, জলপাইগুড়ি। প্রবল বর্ষনে জলস্তর বেড়ে লাল সতর্কতা জারি হয়েছে তিস্তায়। প্লাবিত জলপাইগুড়ির একাধিক গ্রাম। পাহাড়ে বহু জায়গায় ধস নেমেছে। তছনছ অবস্থা ৫৫ ও ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের। ফাটল দেখা দিয়েছে উত্তরবঙ্গের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সেতুতে। সমস্যায় পড়েছে পাহাড়ে ঘুরতে আসা পর্যটকেরা। অনেকেই আটকে পড়েছেন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ধস সরানোর কাজ চলছে। সবমিলিয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি।

Advertisment

বৃষ্টিতে কার্শিয়াং এর কাছে মহানদী, পোখরিবং, লোধামা, চংটং, রিম্বিক, জোড়বাংলো, কালিম্পং ও ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের ২৯ মেইল, কালিঝোড়া সহ একাধিক জায়গায় ধসের খবর মিলেছে। যান চলাচল বন্ধ রয়েছে সিকিম গামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক, দার্জিলিং এর পোখরিবং- সুখিয়াপোখরি রোড, ঘুম-বিজনবাড়ী, লাভা-আলগারা রোড, লোধামা বাজার, চংটং-দার্জিলিং রোড, লোধামা-মানেভঞ্জন রোড, জোরবাংলো-বিজনবাড়ী রোড ও রিম্বিক-শ্রীখোলা রোডে । এই সমস্ত পাহাড়ি পথে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ধ্বস সরানোর কাজ শুরু হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফে। ধ্বস সরানোর কাজে মোতায়েন করা হয়েছে গ্রেফ-কেও।  ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে ধ্বস সরানোর কাজ চলছে। আশাকরা হচ্ছে বিকেলের পর থেকে যান চলাচল শুরু বতে পারে। দার্জিলিং যাওয়ার বিকল্প রাস্তা রোহিনী ও পাঙ্খাবাড়ি সড়ক খোলা রয়েছে।  

এদিকে প্রবল জলস্রোতে  শিলিগুড়ির কাছে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর গুরুত্বপূর্ণ বালাসন নদীর সেতুতে ফাটল দেখা দিয়েছে। সেই সেতু দিয়ে সম্পুর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সবরকমের যান চলাচল। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে দুধিয়ার লোহার ব্রীজের। ফলে দুধিয়া-সুহিয়াপোখরি রাস্তা দিয়ে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ কালিম্পং এর রংপো সেতু।  

মঙ্গলবার বিকেল থেকেই প্রবল বর্ষনের কারণে জল বাড়তে শুরু করে তিস্তা মহানন্দা বালাসন সহ ডুয়ার্সের সব নদীতেই। বিপদ সীমার ওপর দিয়ে বইছে তিস্তা, রংপো নদীর জল।  কালিম্পং জেলার গরুবাথান এলাকায় মেঘভাঙ্গা বৃষ্টির খবর মিলেছে। ত্রিবেনীতে তিস্তার জল বেড়ে ছাপিয়ে গেল পাহাড়ি রাস্তা। এদিকে পাহাড় সমতলে ভারি বর্ষনে তিস্তায় জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা।

তিস্তার জল ঢুকে প্লাবিত হয়েছে জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন সারদাপল্লী সুকান্তপল্লী এলাকা। সেখানকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিরাপদ স্থানে। জলপাইগুড়ি, রাজগঞ্জ, ময়নাগুড়ি, ক্রান্তি ব্লকের মধ্য দিয়ে বয়ে গিয়েছে তিস্তা, আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে নদী লাগোয়া গ্রাম গুলিতে। মৌয়ামারী, চাপাডাঙ্গা, নন্দনপুর, পাতকাটা সহ আরও বেশ কিছু এলাকার ১০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

উদ্ধারকার্যে মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল ও সিভিল ডিফেন্সকে। জানিয়েছেন জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা বসু গোদারা। তিস্তার পাশাপাশি ভূটানে প্রবল বৃষ্টির কারন জলস্তর বেড়েছে ডুয়ার্সের জলঢাকা নদীতে। সেখানেও জারি করা হয়েছে হলুদ সংকেত।

টানা ভারি বর্ষনে বিপর্যস্ত পাহাড় সমতল। এই সময় প্রচুর পর্যটক রয়েছেন পাহাড় ও ডুয়ার্সে। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে পাহাড়ে ঘুরতে আসা পর্যটকেরা। তারা একপ্রকার গৃহবন্দী অবস্থাতেই রয়েছেন তারা। পাহাড়ে বহু জায়গায় ধসের কারণে ফিরে আসতে পারছেন না। চরম সমস্যায় তারা। এই পরিস্থিতিতে পর্যটকদের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে যাতে কোন গাড়ির চালক ভাড়া বেশি নিতে না পারে তার জন্য নজর রাখছে প্রশাসন। 

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

darjeeling north bengal Jalpaiguri
Advertisment