Advertisment

শহর বর্ধমানের পর কাটোয়ায় হেরোইন কারখানার হদিশ, বড় অস্বস্তি পুলিশের

রাজুয়া এলাকায় থাকা গোলাম মুর্শেদের বাড়িতে অভিযান চালাতেই হদিশ মিললো হেরোইন কাখানার। থেকে উদ্ধার হয়েছে কয়েক কোটি টাকার হেরোইন ও হেরোইন তৈরির উপকরণ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
heroin factory katwa east burdwan, কাটোয়ায় হেরোইন কারখানার হদিশ

কারবারের মূল পাণ্ডা গোলাম মুর্শেদ। তার এই বাড়িতেই চলত বেআইনি কাজ। ছবি- প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়

ভারতীয় নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত অফিসার পরিচয় দেওয়া গোলাম মুর্শেদ যে আসলে কুখ্যাত হেরোইন কারবারী তা কেউ টেরই পাননি। কিন্তু, টেরপেয়ে গিয়েছিল রাজ্য পুলিশের এসটিএফ-এর কর্তারা। তাঁরা শনিবার ভোররাতে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার রাজুয়া এলাকায় থাকা গোলাম মুর্শেদের বাড়িতে অভিযান চালাতেই হদিশ মিললো হেরোইন কাখানার। থেকে উদ্ধার হয়েছে কয়েক কোটি টাকার হেরোইন ও হেরোইন তৈরির উপকরণ। এই ঘটনায় এসটিএফ গোলাম মুর্শেদকে ছাড়াও তাঁর সহযোগী আঙুর আলি, মিনারুল শেখ ও মিঠুন শেখকে
গ্রেফতার করা হয়েছে। মিঠুন কাটোয়ার বাসিন্দা হলেও বাকি দু’জনের বাড়ি নদীয়ায়। শহর বর্ধমানের পর এবার কাটোয়ায় হেরোইন তৈরির কারখানার হদিশে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সুর চড়িয়েছে বিরোধী দলগুলো।

Advertisment

কাটোয়ার রাজুয়া এলাকায় বিশাল ঝাঁ চকচকে বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন গোলাম মুর্শেদ। তিনি নিজেকে ভারতীয় নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত অফিসার বলে পরিচয় দিতেন। তাই এলাকাবাসীও গোলাম মুর্শেদকে সন্মানীয় ব্যক্তি হিসাবেই মনে করতেন প্রতিবেশীরা। সেই সুযোগ নিয়ে গোলাম তাপ বাড়িতে গড়ে তোলেন হেরোইন তৈরির কারখানা।ভিন রাজ্য থেকে হেরোইন তৈরির কারিগররা গোলাম মুর্শেদের বাড়িতে এসে কাজ করতেন।দীর্ঘদিন ধরে এই ভাবেই তিনি পুলিশ,প্রশাসন ও এলাকাবাসীর চোখে ধুলো দিয়ে নিজের বাড়িতে হেরোইন তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

গোলাম মুর্শেদ মণিপুর সহ পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে হিরোইন তৈরির উপকরণ কাটোয়ার বাড়িতে
আমদানি শুরু করে। খবর যায় এসটিএফের কাছে। তার পর থেকে এসটিএফের নজরে ছিল গোলাম মুর্শেদের বাড়ি। শনিবার ভোর রাতে ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এসটিএফ হেরোইন তৈরির কারখানার হদিশ পায়।

চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি শহর বর্ধমানের শ্রীপল্লী এলাকায় চলা হেরোইন তৈরি ও পাচারের পর্দা ফাঁস করে ছিল এসটিএফ । শ্রীপল্লীতে মুরগির খাবার বিক্রীর আড়ালে যে হেরোইনের কারবার চলছিল তা কারুরই জানা ছিল না। সেখানকার হেরোইন তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়ে এসটিএফ ছয় জনকে হাতে নাতে ধরে ফেলে । তাঁদের মধ্যে দু’জন ছিলেন মণিপুরের ও অপর দু‘জন ছিলেন ওড়িশার বাসিন্দা। ওইদিন উদ্ধার হয় ১৩ কেজি হেরোইন ও রাসায়নিক উপকরণ। যার আনুমানিক মূল্য ৬৫ কোটি টাকা বলে এসটিএফের তরফে দাবি করা হয়েছিল।এছাড়াও শ্রীপল্লীর হেরোইন কারবারীর ডেরা থেকে এসটিএফ পায় ২০ লক্ষ ১০ হাজার ১০০ টাকা। এই ঘটনার পর ৭মাস কাটতে না কাটতে এসটিএফের অভিযানে কাটোয়ায় হেরোইন কারখানার হদিশ মিলল। পরপর এই ঘটনায় অস্বস্তিতে জেলা পুলিশ। কাটোয়ায় হেরোইন কারখানার হদিশ উদ্ধার নিয়ে জেলা পুলিশের আধিকারিকদের কেউ কোন মন্তব্য করতে চান নি ।

জেলা বিজেপি সহ-সভাপতি সৌম্যরাজ বন্দ্যেপাধ্যায় বলেন, “এসটিএফের অভিযানে পরপর হেরোইন তৈরির কারখানার হদিশ উদ্ধারের ঘটনা প্রমাণ করছে পূর্ব বর্ধমান জেলা মাদক কারবারের ডেরা হয়ে উঠেছে।
এদের পিছনে কাদের মদত রয়েছে তার পর্দা ফাঁস হওয়াটাও জরুরী।" পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের মুখপত্র দেবু টুডু বলেন, “এই রাজ্যের পুলিশ সজাগ ও সতর্ক রয়েছে বলেই হেরোইন কারবারীরা ধরা পড়ছে। এই নিয়ে বিজেপি নেতাদের কোনও মন্তব্য করা মানায় না। বাংলায় অন্যায় কাজ করে কেউ পার পায় না। কারণ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।"

West Bengal Katwa East Burdwan burdwan
Advertisment