এত নিষেধাজ্ঞার পরও পুলিশ প্রশাসনের অগোচরেই চলছিল নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি। শনিবার রাতেই খাস কলকাতার একাধিক জায়গা থেকে উদ্ধার করা হল শব্দবাজি। যেগুলির মাত্রা ছাড়াতে পারে ৯০ ডেসিবেল।
শনিবার সন্ধেবেলা বাঙ্গুর এলাকা থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয় প্রায় ২৫ কেজি নিষিদ্ধ আতসবাজি। সূত্র মারফত খবর পেয়ে লেকটাউন থানার পুলিশ রাতারাতি ঢুঁ মারে ওই এলাকায়। সুশান্ত বৈদ্য নামে বছর ৫৩-র এক ব্যক্তির কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় নিষিদ্ধ বাজি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেন নি। কোথা থেকে এই ধরনের বাজি নিয়ে এসেছেন তার কোনো সঠিক তথ্যও দিতে পারেন নি অভিযুক্ত। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।
নয়াপট্টি থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয় প্রায় ৫০ কেজির শব্দবাজি। যার মধ্যে ছিল ৫০ টি অতিরিক্ত শব্দ উৎপাদন করা রকেট ও ১০ টি শেল। অভিযুক্ত আনন্দ চন্দ্রকে গ্রেফতার করেছে ইলেক্ট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিশ।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বি জে মার্কেট এলাকায় পূর্ব বিধাননগর পুলিশ তল্লাশি অভিযান চালায়। এদিনই কেষ্টপুরের সিদ্ধার্থ নগরেও হানা দেয় পুলিশ। বাজি বিক্রির জন্য পর্যাপ্ত লাইসেন্স না থাকায় ও একইসঙ্গে নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি করায় ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয় দুজনকে। কোথা থেকে এই বাজি আসছে, এবং কারা এর প্রস্তুতকারী, তা খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে। লুকিয়ে নিষিদ্ধ বাজি বিক্রির অভিযোগ রয়েছে এদের ওপর।
প্রসঙ্গত, বাতিল করা হয়েছিল ১০১ ধরনের বাজি। টালা পার্কে কলকাতা পুলিশ, দমকল, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সামনে বাজি পরীক্ষার পর সেখানেই বাতিল হয়ে যায় আরও চার ধরনের বাজি। এবছর ছাড়পত্র পেয়েছে সাতটি বাজি। পরীক্ষামূলকভাবে শব্দ মাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে ৯০ ডেসিবেলে। চার ধরনের বাজি সেই মাত্রা অতিক্রম করায় কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আধিকারীকদের তত্ত্বাবধানে সেগুলি নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়।
List of Banned Firecrackers in Kolkata, West Bengal
ওই দিন বাজি বাজারের সংগঠনের তরফ থেকে কলকাতা পুলিশ ও দমকল, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের হাতে মোট ১১ ধরনের বাজি তুলে দেওয়া হয়। শব্দের নিরিখে পাঁচ মিটার দূরত্ব থেকে মাপা হয় বাজি ফাটানোর পরে আওয়াজের তীব্রতা। যার মধ্যে সাতটি বাজি ছাড়পত্র পায়, বাকি চারটির বিক্রি নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। PESO'র প্রতিনিধিদের সঙ্গে পরীক্ষা করার পর পরিবেশবিদ্যা ইঞ্জিনিয়ার বিপ্লব বৈদ্য জানান, নিষিদ্ধ করা হয়েছে ওসিকে বাস্টার্স, ১৫ শট স্টার উৎসব, অনিরুদ্ধ শেল, মেগা সিরিজ শেল, এই চারটি আতসবাজি।
কলকাতা পুলিশের রিজার্ভ ফোর্সের আধিকারিক সৌম্য রায় বলেছিলেন, "পাঁচটি বাজি ডিলারদের সংগঠনের কাছ থেকে কোনো রকম বাছাই ছাড়াই ১১টি বাজির ধরণ বাছা হয়। যেগুলো বাতিল হয়ে যাবে, সে সব বাজি কেউ বিক্রি করলে বা ফাটালে তাদের গ্রেফতার করা হবে ও আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"