নির্বাচনী ফলে বারবার ধাক্কা। দলে চরমে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এসবের জন্য বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকেই দায়ী করেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে রাজ্য বিজেপি। এখানেই থামেননি অনুপম। উল্টে দলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীদের তৃণমূলে না যাওয়ার আর্জি জানিয়ে মদত দিয়েছেন। তাঁকে ঘিরে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে ক্ষোভ-বিক্ষোভ জারি। প্রশ্ন উঠছিল, সব দেখেও কেন নীরব বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা? উত্তরে বাংলার বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, 'সবটা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জানেন। কয়েক দিনের মধ্যে আপনারা এর ফল দেখতে পাবেন।' শেষপর্যন্ত সেই কথার জের দেখা গেল? জানা গিয়েছে, বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরার ওয়াই ক্যাটাগরি নিরাপত্তা তুলে নিয়েছে অমিত শাহর নেতৃত্বাধীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
বঙ্গ বিজেপি নেতাদের নালিশের জেরেই কী শাহ-র এই পদক্ষেপ? জানতে অনুপম হাজরার সঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার তরফে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে সোশাল মিডিা পোস্ট করেছেন অনুপম হাজরা। সেখানে তাঁর দাবি, নভেম্বর মাসে এক ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি নিরাপত্তা তুলে নিতে অনুরোধ করেছিলেন। তবে কোন কারণে সেই আবেদন তা খোলসা করেননি বিজেপির এই কেন্দ্রীয় নেতা।
সর্বভারতীয়স্তরে বিজেপির অন্যতম সম্পাদক হলেও বাংলায় দলের কোনও দায়িত্বে নেই অনুপম হাজরা। কিন্তু, বঙ্গ বিজেপি নিয়ে নাগাড়ে মুখ খুলেছেন তিনি। বিস্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নানা কাজ, বিশ্বভারতীয় ফলক বিতর্কে পার্ট লাইনের বিরুদ্ধে গিয়েই সোচ্চার হন এই কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতা। এছাড়াও তাঁর অভিযোগ, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী ও সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের প্রভাবেই দলের বহু আদি কর্মী বসে রয়েছেন। তাঁদের কোনও পদ দেওয়া হচ্ছে না। বীরভূমের জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহাও 'তৃণমূলপন্থী' বলে তোপ দেগেছিলেন অনুপম। ধ্রুব সাহার লোকেরাই তাঁর প্রাণনাশের চেষ্টা করতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। একের পর এক ফেসবুর লাইভে সুকান্ত, অমিতাভদের নেতৃত্বকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অনুপম। সেসময় রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন, 'উনি আগে বালুরঘাট সামলান। ক'দিন আগেই দেখলাম ২০ জন লোক নিয়ে ঘুরছেন। তার মধ্যে ১৮ জনই নিরাপত্তাকর্মী।'
দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদকের এইসব কীর্তিতে বেজায় অস্বস্তিতে পরে বঙ্গ বিজেপি নেতারা। তখন সুকান্তবাবু বলেছিলেন, 'কয়েক দিনের মধ্যে আপনারা এর ফল দেখতে পাবেন।' গেরুয়া শিবিরের অন্দরের খবর, রাজ্যের নেতাদের সমালোচনার বিষয়টি যে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ভাল চোখে দেখেনি ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা তুলে নিয়ে সেটাই অনুপম হাজরাকে বুঝিয়ে দিল দল। পাশাপাশি বার্তা দিল দলের অন্যান্য বিক্ষুব্ধদেরও।