চোলাই মদ খেয়ে দুজনের মৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়ার মহম্মদবক্স এলাকায়। মৃতদের একজনের নাম বাবলু কর্মকার। সে মহম্মদবক্স এলাকার বাসিন্দা। অন্য ব্যক্তির নাম ও পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
এ ঘটনার পর গ্রামে থাকা সমস্ত চোলাইয়ের ঠেকে ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফাঁসিদেওয়া থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে পুলিশ যাওয়ার খবর পেয়েই ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় চোলাই বিক্রেতারা। মদে বিষক্রিয়ার জেরেই মৃত্যু হয়েছে কিনা সেই বিষয়ে এখনই কিছু বলতে চায়নি জেলা পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কোন মন্তব্য করতে নারাজ পুলিশ কর্তারা। ডিএসপি ( গ্রামীণ) প্রবীর মণ্ডল বলেন, '‘তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না এলে কিছু বলা যাবে না।’’
মহম্মদবক্স এলাকার বাসিন্দা বাবলু কর্মকারের স্ত্রী নেই। ছেলেকে নিয়ে দাদা এবং বৌদিদের সঙ্গে থাকতেন তিনি। মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, এলাকায় প্রচুর চোলাইয়ের ঠেক রয়েছে। প্রতিদিনই ওই ঠেকে পড়ে থাকত বাবলু কর্মকার। বুধবার বাড়িতে জানায় তার পেটে ব্যথা হচ্ছে। এরপর রাতেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে সে। রাত সাড়ে বারোটা পর্যন্তও বাড়িতে ফেরেনি বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে মৃতের ভাইপো অভিজিৎ কর্মকার ঘুম থেকে উঠে দেখে তাদের বাড়ির বারান্দায় এক অচেনা ব্যক্তির মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে। তখন অভিজিৎ কাকার ঘরে গিয়ে দেখতে পায় সেখানে মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে বাবলুর দেহ। সঙ্গে সঙ্গেই সে ঘটনার কথা জানায় পরিবারের লোকজন এবং প্রতিবেশীদের। ছুটে আসেন এলাকাবাসীরা। মৃতদেহ দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন তাঁরা। এলাকার সমস্ত চোলাইয়ের ঠেক ভাঙা শুরু হয়। ভাঙা হয় ৯ টি আড্ডা।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফাঁসিদেওয়া থানার বিশাল বাহিনী। তারা এসে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে আনলেও ততক্ষণে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দিয়েছে চোলাই বিক্রেতারা। পুলিশ মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায়। মেডিকেল কলেজ সূত্রে খবর, দুজনের পেটেই অ্যালকোহল পাওয়া গিয়েছে। তবে মদে বিষক্রিয়ার জন্যেই মৃত্যু কিনা তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে তারপরেই জানা যাবে।
মৃতের ভাইপো অভিজিৎ কর্মকার বলেন, ‘‘এলাকায় প্রচুর চোলাইয়ের ঠেক রয়েছে। দিনরাত কাকা সেখানেই পড়ে থাকত। ঠেকগুলি ভাঙতে পুলিশ কোন ব্যবস্থাই নেয়নি।" স্থানীয় তৃণমূল নেতা আইনুল হক বলেন, '‘পুলিশকে চোলাই ঠেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে ।’’