কন্যাসন্তান হয়েছে দ্বিতীয়বার। বাড়িতে সদ্যজাত কে নিয়ে আসার জন্য অভিনব উদ্যোগ নিলেন পিতা। রীতিমতো ব্যান্ড ও ঢাক বাজিয়ে একটি মারুতি গাড়িকে সাজিয়ে শোভাযাত্রা বের করে বাড়ি থেকে নার্সিংহোম গেলেন বাবা।
Advertisment
ঘটনাটি ঘটেছে এদিন দুপুরে চুচুড়ায়। পেশায় ব্যবসায়ী সুজয় চন্দের বাড়ি কারবালা মোড়ের কাছে শুভপল্লী এলাকায়। হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট গড়েছেন বাড়ির কাছেই। আজ থেকে বছর ছয়েক আগে যখন প্রথম কন্যাসন্তান হয় তার পরই তিনি এই ইনস্টিটিউট এর ব্যবসা চালু করেন। গত রবিবার তাঁর স্ত্রী ত্রিমা স্থানীয় নার্সিংহোমে আবার একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। তাতেই আপ্লুত সুজয়।
এদিন স্ত্রীকে ছুটি দিয়েছে নার্সিংহোম। কনিষ্ঠ কন্যা সহ ঘরে ফেরার পালা ত্রিমার। আর সেই মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখতে সুজয়ের উদ্যোগের জুড়ি মেলা ভার। আত্নীয়স্বজন থেকে পাড়া প্রতিবেশী সবাই নাচতে নাচতে মিছিল করে যান নার্সিংহোমে। সুজয় বলেন, 'অনেকের কন্যা সন্তান হলেই ভ্রু কুঁচকে যায়। কিন্তু নারীই হলো সমাজের সৃষ্টিকর্তা। তাই আমি সমাজকে এই বার্তা দিতে চাই পুত্র এবং কন্যা সবাইকেই সমদৃষ্টিতে দেখা উচিত। কন্যা মানেই অবহেলার বস্তু নয়। আমি আমার লক্ষীকে ঘরে নিয়ে যাচ্ছি।'
একবার পুরী বেড়াতে গিয়ে সমুদ্রে স্নান করার সময় জগন্নাথদেবের মূর্তি পেয়েছিলেন সুজয়বাবু। মহাপ্রভূকে বাড়িতে এনে প্রতিষ্ঠা করেন। সুজয়ের কথায়, 'আমি আমার পুত্র সন্তান তো পেয়েই গিয়েছি। তাই পুত্রের কোনও অভাব বোধ করি না।'
নার্সিংহোমের অন্যতম কর্ণধার মৈত্রেয়ী চ্যাটার্জি ও ব্যাপারটি বেশ উপভোগ করেছেন। তিনি বলেন, 'আমিও নিজে নারী। কন্যাসন্তানকে যেভাবে সাদরে সমাদরে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন সেটা সমাজের বুকে দৃষ্টান্তস্বরূপ।' খবর পেয়ে চলে আসেন হুগলি চুঁচুড়া পুরপ্রধান অমিত রায়। তিনিও জানান, গোটা ঘটনা তাঁর কাছে বেশ ব্যতিক্রমী ঠেকেছে। আজকালকার দিনে এরকমটা দেখা যায়না। এর জন্য সুজয় বাবুকে তিনি ধন্যবাদ দেন।