পুর-নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে রবিবার সাতসকালে তাঁর বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। কেন্দ্রীয় এজেন্সির গোয়েন্দারা তাঁর বাড়িতে তন্নতন্ন করে তল্লাশি চালায়। ৬ ঘণ্টা তল্লাশি চালানোর পর বেরিয়ে যান আধিকারিকরা। কিন্তু যাঁর বাড়িতে এই তল্লাশি অভিযান, তিনি আর কেউ নন, তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। টানা তল্লাশি এবং জেরার পরও মুখে হাসি কামারহাটির বিধায়কের।
পুরসভায় চাকরি দুর্নীতি কাণ্ডে তাঁকে কী জিজ্ঞেস করল সিবিআই, আধিকারিকরা বাড়ি থেকে বেরোতেই ওহ, লাভলি! মদনের দাবি, তাঁর ক’টা বউ জানতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শুধু তাই নয়, তিনিও সিবিআইকে পাল্টা প্রশ্ন করেছেন। জানতে চেয়েছেন, তাঁর অভিনীত সিনেমা সিবিআই আধিকারিকরা দেখেছেন কি না।
এদিন কামারহাটির বিধায়কের পৈতৃক বাড়ি ভবানীপুরে যায় সিবিআই। হানা দেওয়া হয় দক্ষিণেশ্বরের বাড়িতেও। এমনকী বিধায়কের অফিসেও যান গোয়েন্দারা। টানা জেরার পর বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মদন। মুখে টেনশন নেই, সেই পরিচিত একগাল হাসি। চোখে কালো রোদচশমা. কালো টি-শার্ট ও ট্রাউজার্সে মদন জানালেন, তাঁকে বেশ কিছু প্রশ্ন করেছে সিবিআই। একবার এও জানতে চাওয়া হয়, তাঁর বউ কটা!
আরও পড়ুন ফিরহাদ-মদনের বাড়ির পাশাপাশি একযোগে রাজ্যের ১২ জায়গায় CBI হানা
মদনের দাবি, ঠিক কোন পুরসভায় নিয়োগ নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হচ্ছে, সেটাই ঠিক ভাবে বলেননি সিবিআই আধিকারিকরা। তিনি জিজ্ঞাসা করায় এক আধিকারিক নাকি বলেছেন, ‘‘ওই যে মিউনিসিপ্যাল নিয়ে সব হচ্ছে না? ওই জন্য এসেছি।’’ মদনের দাবি, এর পর তাঁকে সরকারি ভাবে অন রেকর্ড সিবিআই প্রশ্ন করে, তাঁর কত জন স্ত্রী। তৃণমূল বিধায়কের কথায়, ‘‘আমাকে বলল, আপনার একটা না দুটো বউ? আমি বললাম, সেটা তো খোঁজ করলেই পাওয়া যাবে। তবে এটা জানি, আমি হাঁটলেই ৫০ জন গোপিনী হাঁটবে। কিন্তু আমার নামে কোনও ৪৯৮ ধারায় মামলা নেই। আমার সব ভার্চুয়াল।’’
তিনিও সিবিআইকে প্রশ্ন করেছেন যে, তাঁর অভিনীত ‘ও লাভলি’ সিনেমা তাঁরা দেখেছেন কি না। তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘‘আমাদের অফিসে ভিক্ষা করতে এলে এক কেজি চাল, একটু ডাল, মিষ্টি দিই। বাচ্চা এলে তাকে চকোলেট দিই। তাই টেট হোক, গ্রুপ ডি হোক, আমাদের অফিসে যদি কেউ চাকরির খোঁজে আসে, তাঁকে তো ডান্ডা মেরে তাড়াতে পারি না। ফলে অনেকেই এসেছেন। হাজার হাজার আবেদন করেছেন মানে হাজার হাজার চাকরি হয়েছে, এমন তো নয়।’’
শেষে বিধায়কের হুঁশিয়ারি, ‘‘আমি মদন মিত্র। বুকের পাটা ফুলিয়ে বলছি, ছেলেমেয়েদের চাকরির জন্য শরীরের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়াই করব। কিন্তু তাতে যদি কেউ এক ইঞ্চি দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারে, ধরতে হবে না। আমি নিজে গলায় দড়ি দিয়ে গঙ্গায় লাফ দেব।’’