হাসপাতালে ভর্তির পর কত খরচ, কত দিল সরকার, সেই হিসাব রোগীকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই শুরু হয়েছে এই প্রক্রিয়া। সোমবার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে যেসব রোগী ছাড়া পেয়েছেন, তাঁদের হাতে চিকিৎসাবাবদ সরকারের খরচের হিসাব তুলে দেওয়া হয়েছে। নথিতে উল্লেখ, সংশ্লিষ্ট রোগীর চিকিৎসায় রাজ্য সরকারের ব্যায়ের পরিমাণ, এছাড়া লেখা রয়েছে- হাসপাতালের কাছে রোগীর কোনও অর্থ বাকি নেই।
মালদা থেকে ভাঙা হাত নিয়ে চিকিৎসা করাতে কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন মইদুল ইসলাম। সোমবারই তাঁর ছুটি হয়েছে। হাসপাতাল ছাড়ার সময় অন্যান্য সব নথির সঙ্গেই মইদুলের কাছে তাঁর চিকিৎসায় ব্যার হওয়া সরকারি অর্থের অঙ্কও জানানো হয়। নথিতে লেখা রয়েছে, মইদুলের ভাঙা হাত জোড়া লাগাতে ৬৪ হাজার ৮০০টাকা খরচ হয়েছে। যার পুরটাই মিটিয়েছে রাজ্য সরকার।
সরকারি হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায় বলেছেন, 'কোনও একজনের চিকিৎসায় সরকার কত ব্যয় করছে রোগী ও তাঁর বাড়ির লোকেদের তা জানানো দরকার। তাই এই নথি জিসচার্জের সময় রোগীদের দেওয়া হচ্ছে।' আর জি কর মেজিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ বলেছেন, 'স্বসাথ্য পরিষেবায় সরকারের ব্যয় কত, কী ভূমিকা তা এই উদ্যোগের মাধ্যমে রোগী জানতে পারবেন।'
আরও পড়ুন- ‘ফুলে সারা হাত কালো হয়ে গিয়েছিল!’, ভয়ে SSKM-এ আর রক্তপরীক্ষা করান না মমতা
গত ২১ নভেম্বর নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে একটি বৈঠক হয়৷ সেখানে প্রস্তাব দেওয়া হয়, সাধারণ মানুষের জন্য অনেক স্বাস্থ্য পরিষেবা দান শুরু করেছে রাজ্য সরকার৷ বিপুল অঙ্কের চিকিৎসার খরচ নবান্ন বহন করছে৷ কিন্তু কত খরচ দিচ্ছে রাজ্য সরকার, তা শেষ পর্যন্ত রোগীর পরিবার জানতে পারেন না৷ বৈঠকে প্রস্তাব দেওয়া হয়, রোগীকে খরচের হিসাব জানাতে হবে৷
সেই প্রস্তাব পাওয়ার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'আমি আগেই বলেছিলাম, এরকম একটা ব্যবস্থা চালু করতে৷ এই প্রস্তাব এসে ভাল হল, আমরা প্রস্তাব গ্রহণ করলাম৷' এরপরই মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন যে, 'যখন কোনও রোগী ভর্তি হল তখন, তাঁর চিকিৎসার জন্য কত টাকা খরচ হল, কত টাকা সরকার দিল, এই তথ্য রোগীকে দিতে হবে। প্রতিটা হাসপাতাল এই নিয়ম চালু করুক৷'