করোনাকালীন সময়ে গত দুবছর কার্যত ঘরবন্দি অবস্থাতেই কেটেছে সকলের সেই সঙ্গে শিশুদেরও। দু'বছর পর খুলেছে স্কুল। চৈত্রের তীব্র দাবদাহে হাঁসফাঁস অবস্থা শিশুদের। প্রচণ্ড গরমে নিজেদের শরীর ঠিক রাখতেই হিমশিম খাচ্ছেন বড়রাই, সে ক্ষেত্রে বাচ্চাদের প্রতি বাড়তি নজর দিতেই হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রায় দু'বছর পড়ে স্কুলে যাওয়ার চাপ, পড়াশুনার বাড়তি চাপ, পরীক্ষা, খেলাধুলা সবকিছুর সঙ্গে তাল রাখতে শিশুরা যেন হাঁফিয়ে উঠেছে। কী করে আপনার সন্তানকে এই প্রচণ্ড গরমেই রাখবেন এক্কেবারে তরতাজা, জানালেন প্রখ্যাত শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ইন্দ্রনীল চৌধুরী।
ডাক্তার চৌধুরীর কথায়, ‘এমনিতেই দু'বছর বাচ্চারা সে ভাবে বাইরে বেরোয়নি। ফলে দু'বছর পরে প্রচণ্ড গরমে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে সে ক্ষেত্রে অভিভাবকদের বাড়তি কিছু সতর্কতা নেওয়া উচিত।’
তাঁর কথায়, ‘যে বিষয় প্রথমেই মাথায় রাখতে হবে তা গরমে বাচ্চাদের যেন ডিহাইড্রেশন না হয়। সে জন্য গরমে বেশি করে জল খাওয়া একান্ত প্রয়োজন। স্কুলের ব্যাগে একটার বদলে দুটো জলের বোতল রাখা যেতে পারে। একটায় সাধারণ জল, অন্যটায় জলের সঙ্গে গ্লুকোজ মিশিয়ে রাখা যেতে পারে’।
সেই সঙ্গে বেশি করে ডাবের জল, আখের রস, তরমুজ, শসা জাতীয় ফল খেতে হবে। এরপর যে বিষয় মাথায় রাখতে হবে তা হল, বাচ্চারা এই সময়ে গরমে যাতে বাইরের খাবার যেমন জাঙ্ক ফুড, কাটা ফল ইত্যাদি না খায়।
তৃতীয়ত আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে ঘাম থেকে অনেক সময় স্কিন rash-এর নানান সমস্যায় ভোগে বাচ্চারা। সে ক্ষেত্রে বেবি সোপ, পাউডার ব্যবহার করতে হবে। গরমে স্কুল থেকে ফিরেই বাচ্চাদের স্নান করাবেন না। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরলে ভারী কিছু খাবারের বদলে ফ্রুট জ্যুস, হালকা খাবার দিন। গরমে বাচ্চাদের হালকা, পাতলা জামাকাপড় পরান। হালকা রং শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
এরপর যেটা আমাদের মনে রাখতে হবে, 'বাচ্চাদের রোদে বেরনোর আগে সানস্ক্রিন লাগানো বিশেষ ভাবে কার্যকর। এতে গরম থেকে শিশুর ত্বক রক্ষা পাবে। রাত্রে গরম লাগলেও মশারি টানানোর ব্যবস্থা করুন। যদি তা না হয় অবশ্যই রাত্রে মসকিটো রিপেল্যান্ট লাগিয়ে দিন। এসিতে বেশিক্ষণ না থাকাই ভাল। তবে, হবে দুপুর ১২টা থেকে ৪টে পর্যন্ত বাচ্চাদের রোদে না বের করাই ভাল। একান্ত প্রয়োজন হলে সঙ্গে ছাতা টুপি রাখুন। এই সময় ডায়ারিয়া পেটের রোগের ব্যপারে সাবধানতা বজায় রাখতে হবে'।