Advertisment

ঠান্ডা-গরমে কাবু বাড়ির খুদে সদস্য, কীভাবে সামলে রাখবেন? জানুন বিশেষজ্ঞের মতামত!

সতর্ক থাকুন, অযথা আতঙ্ক করবেন না। বিশেষ প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যান।

author-image
Sayan Sarkar
New Update
NULL

প্রতীকী ছবি

বিদায়বেলায় শীতের আমেজ থাকলেও লাফিয়ে বাড়ল তাপমাত্রা। ফের ঊর্ধ্বমুখী পারদ। সোমবারের তুলনায় মঙ্গলবার তিন ডিগ্রি বাড়ল কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যে ফের বৃষ্টি শুরু হবে। চলবে রবিবার পর্যন্ত। পশ্চিমী ঝঞ্ঝা এবং পূবালি হাওয়ার সংঘাতে ভরা মাঘে এই অকাল বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

Advertisment

হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ, মঙ্গলবার থেকে ফের বাড়বে তাপমাত্রা। দুপুরে রোদ বেশি থাকায় গরম লাগছে। রাতে আবার ঠান্ডা।গরম ঠান্ডায় জাঁকিয়ে বসছে সর্দি-কাশি। সেই সঙ্গে অবশ্যই রয়েছে করোনার আতঙ্ক। নাজেহাল বাবা, মা’রা। কীভাবে তাঁদের সন্তানদের এই ঠান্ডা-গরমে সুস্থ রাখবেন, তাই যেন এখন তাদের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ করোনার লক্ষণ আর সাধারণ ভাইরাল ফিভারের সঙ্গে মিল রয়েছে বহু বিষয়ে। জ্বর, গলাব্যথা, দুর্বলতা, সর্দি-কাশি সবেতেই থাকে। সিজন চেঞ্জে শরীর খারাপ হলে বড়রাই কাবু হয়ে পড়ছেন, ছোটদের কষ্ট আরও বেশি। কারণ ছোটদের ভেতরে খুব ঠান্ডা লাগলেও তা চট করে বোঝা যায় না।এছাড়াও বাচ্চাদের খুব তাড়াতাড়ি জ্বর উঠে যায়। সেখান থেকে তড়কা বা খিঁচুনির সমস্যাও হতে পারে। দেখে নিন এই মরসুমে বাচ্চাকে কীভাবে সুস্থ রাখবেন। জানিয়েছেন প্রখ্যাত শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ইন্দ্রনীল চোধুরী।

• বাচ্চারা হঠাৎ করে এই তাপমাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না। তাই ঠান্ডা লেগে জ্বর সর্দি হতেই পারে। সাধারণ ভাইরাল হয়ে দিন সাতেকের মধ্যে সেরে যাবে। এভাবেই বাচ্চাদের দেহে তৈরি হয় ইমিউনিটি।

• যদি সর্দি-কাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্ট থাকে, বা কাশি অন্যরকম মনে হয় তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। কারণ বাচ্চা শ্বাস নিতে না পারলেই সমস্যা গুরুতর হয়ে যায়। বাড়িতে সবসময় নেজাল ড্রপ, প্যারাসিটামলের মতো ওষুধ রাখুন। এছাড়াও বাচ্চাদের গ্যাসের ওষুধ, বমির ওষুধ এসবও রাখুন।

• বাচ্চাদের নাক বন্ধ হয়ে গেলে খুব কষ্ট হয়। তাই সমস্যা হচ্ছে বুঝলেই নেজাল ড্রপ দিন। জ্বর কমানোর ওষুধ দিন। ঠান্ডা লাগলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তখন চট করে অন্য ব্যাকটেরিয়াও আক্রমণ করতে পারে। তাই অসুবিধে বুঝলে সবসময় চিকিৎসকের কাছে যান।

• একটু হাঁচি কাশি হলেই বাচ্চাকে হনুমান টুপি থেকে মোজা পরিয়ে দেবেন না। এতে গরম লেগে ঘাম জমতেই পারে। বাচ্চার শ্বাস নিতে আসুবিধা হতে পারে। তাই আরামদায়ক পোশাক পরিয়ে রাখুন। হালকা গরমের জামাকাপড় পরিয়ে রাখুন ঘরের মধ্যে।

• ঘরের দরজা-জানলা বন্ধ করে রাখবেন না। বরং আলো-বাতাস খেলতে দিন। এতে ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় থাকবে, রোগ-জীবাণুর প্রবেশ কম হয়।

• একটা বিষয় মনে রাখবেন, গরম লাগলেও এই সময় হটাত করে কোন ভাবেই এসি চালাবেন না। এতে বাচ্চার বিপদ বাড়তে পারে। প্রতিদিন ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করার। একদম ঠান্ডা কিংবা গরম জলে স্নান করাবেন না।

• বাচ্চার জ্বর ১০২ এর উপরে উঠলেই ঠান্ডা জ্বলে স্নান করিয়ে দিন। কিংবা জল পট্টি দিন। এতে দ্রুত তাপমাত্রা যেমন নামবে তেমনই শরীরও সুস্থ হবে। জ্বরের মধ্যে জল ঢাললেও ঠান্ডা লাগবে না। আর বাচ্চার মুখে মাস্ক অবশ্যই রাখবেন।

• সর্দি-কাশি হলে বাচ্চারও গলা ব্যথা হয়। এছাড়াও মুখের স্বাদ চলে যায়। তাই ফলের রস, চিকেন স্যুপ, ডালের জল, সবজির স্যুপ এসব খাওয়ান। আলু সেদ্ধ করে সামান্য নুন-মাখন দিয়ে মেখে ভাতের সঙ্গে খাওয়াতে পারেন।

• মনে রাখতে হবে কোন ভাবেই আপনার সন্তান যেন ডিহাইড্রেড না হয়ে পড়ে সেক্ষেত্রে আপনাকে আপনার বাচ্চাকে প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়াতে হবে। আপনি এক্ষেত্রে ডাবের জল খাওয়াতে পারেন।

• সর্দি হলে জোর করে দুধ না খাওয়ানোই ভালো। পরিবর্তে সুজি, সাবু এসব দিন। মনে রাখবেন, একদম ছোট বাচ্চারা কিন্তু বড়দের থেকেই সংক্রমিত হয়ে পড়েন সেক্ষেত্রে বাড়ির বড়দের অনেক বেশি সাবধানে থাকতে হবে সিজন চেঞ্জের সময়।

• বাইরে থেকে এসে বাচ্চাকে জড়িয়ে ধরবেন না, বা আদর করবেন না। জামাকাপড় বদলে, হাত মুখ ভাল করে ধুয়ে বাচ্চার কাছে আসুন। আগামী ৩ তারিখ থেকেই খুলছে স্কুল। জ্বর সর্দি কাশি হলে স্কুলে পাঠাবেন না। সেই সঙ্গে স্কুলের ব্যাগে মাস্ক, স্যানিটাইজার এগুলি ভরে রাখতে ভুলবেন না।

fever expert view season change take care of your child
Advertisment