Advertisment

২০০ বছরের পুরানো ছাপাখানার খোঁজ মিলল হাওড়ায়

বিশপ কলেজের দ্বিশতবার্ষিকী পালন করার লক্ষ্যে কিছুদিন ধরেই এই চত্বরে তৎকালীন সময়ের স্মৃতিচিহ্নের খোঁজ করা হয়। সেই স্মৃতি খুঁজতে গিয়ে হদিশ মেলে মুদ্রণশালাটির

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
২০০ বছরের পুরানো ছাপাখানার খোঁজ মিলল হাওড়ায়

খোঁজ মিলল ২০০ বছরের প্রাচীন ছাপাখানার। ছবি- অরিন্দম বসু

হাওড়ার বিশপ কলেজের 'স্মৃতির ছাই' উড়িয়েই খোঁজ মিলল প্রায় ২০০বছরের পুরানো ছাপাখানার। ইতিহাসের পাতায় জুড়ল আরও কিছু তথ্য। বিশপ কলেজের দ্বিশতবার্ষিকী পালন করার লক্ষ্যে কিছুদিন ধরেই এই চত্বরে তৎকালীন সময়ের স্মৃতিচিহ্নের খোঁজ করা হয়। সেই স্মৃতি খুঁজতে গিয়ে শিবপুরের কেন্দ্রীয় কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইআইইএসটির ক্যাম্পাসে বন্ধ অবস্থায় থাকা এই ছাপাখানাটির খোঁজ পায় আইআইটিএসের আধিকারিকেরা। প্রাচীন কলেজটির স্মৃতির সন্ধানে নেমে হঠাৎই এই আবিষ্কারে চমক লেগেছে কাজের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের।

Advertisment

আরও পড়ুন- হাওড়া শহর থেকে উঠে যাচ্ছে ভ্যাট, দূষণ কমানোয় নয়া পদক্ষেপ পুরনিগমের

কেন উল্লেখযোগ্য এই বিশপ কলেজ?

১৮২৪সালে কলকাতায় প্রথম অ্যাঙ্গেলিকান বিশপ, থমাস মিডিলটন হাওড়ার শিবপুরে বোটানিক্যাল গার্ডেনের পাশে স্থাপন করেন বিশপ কলেজ। প্রাথমিকভাবে আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স কলেজ হিসেবেই শুরু হয়েছিল এই কলেজ। পাশাপাশি ভারতীয় খ্রিস্টানদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, খ্রিস্টান কলেজ এবং স্কুলগুলির জন্যে শিক্ষকদের ট্রেনিং দেওয়ার কাজও শুরু হয়। উল্লেখ্য, ১৮৪৯ সালে ‘লন্ডন ফার্মাকোপিয়া’ নামক ইংরাজি চিকিৎসাশাস্ত্রের বইয়ের বাংলায় অনুবাদ করেন পন্ডিত মধুসূদন গুপ্ত। সম্ভবত এই ছাপাখানা থেকেই বাংলা ভাষায় প্রথম চিকিৎসা সংক্রান্ত বই ‘ইংলন্ডীয় চিকিৎসা কল্প' ছাপা হয়, যার অনুবাদ করেন মধুসূদন গুপ্ত। ইতিহাস থেকে জান যায়, একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবেই গড়ে উঠেছিলো বিশপ কলেজের এই ক্যাম্পাস।

publive-image এই ঘরেই চলত বই ছাপার কাজ। ছবি- অরিন্দম বসু

সেই সময়ের কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করার করে তোলার জন্য চিকিৎসা শাস্ত্রের বইয়ের বাংলা অনুবাদ ছাপানোর পাশাপাশি ধর্মীয় বইও ছাপা হয়েছিলো এই মুদ্রণঘরে, এমনটাই জানান, আইআইইএসটির অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার ডঃ বিভোর দাস। জানা যাচ্ছে, এই বইটি ছাড়াও প্রায় ৭৫টি বই প্রকাশ হয় এই ছাপাখানা থেকে। তবে অনুমান করা হচ্ছে সেই সময়ে মূলত খ্রিস্টান পাদ্রীরাই চালাতেন এই ছাপাখানাটি। কলেজের প্রয়োজনীয় বইপত্রও এখানেই ছাপা হতো বলে জানা যাচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, নিজেদের প্রয়োজন মেটানোর জন্যেই তৈরি করা হয়েছিল ছাপাখানাটি।

আরও পড়ুন- গঙ্গার ‘দূষিত জলে’ তৈরি হচ্ছে খাবার, তালা ঝুলল হাওড়ার একাধিক হোটেলে

এদিকে, সেই সময়ের নির্মিত বিশপ কলেজের ভবনগুলি এখন রয়ে গেছে ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ভেতরে। এমনকি কলেজের কয়েকটি ঘরে এখনও পঠনপাঠন চলছে। এই বছর দু'শো বছরে পড়ছে বিশপ কলেজ। সেই দ্বিশতবার্ষিকী পালন করার উদ্দেশ্যে গত কিছুদিন ধরেই বিশপ কলেজের স্মৃতিচিহ্নের খোঁজ করা হচ্ছিল কলেজ চত্বরে, জানান ডঃ বিভোর দাস। বিশপ কলেজের দ্বীশতবার্ষিকী উপলক্ষে এই মুদ্রণশালাটিকেও আলাদাভাবে সাজিয়ে তোলা হবে বলে আই আই ই এস টির তরফে জানানো হয়েছে।

Howrah West Bengal
Advertisment