'জলই জীবন', আর সেই জীবন নির্বাহ করার জন্যই ব্যবসার জগতে নয়া ক্ষেত্র পানীয় জলের ব্যবসা। কিছু বছর ধরেই শহর এবং শহরের বাইরেও বাজার কাঁপিয়ে দিচ্ছেন এই সব জল বিক্রেতারা। কিন্তু গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে হাওড়ার বেশ কিছু এলাকায় প্যাকেজড ড্রিঙ্কিং ওয়াটারের একাধিক কারখানায় হানা দেয় হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের খাদ্য সুরক্ষা বিভাগ সহ আরও বেশ কয়েকটি দপ্তর। অভিযোগ, স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই প্যাকেজিং করা হচ্ছে জলের বোতল।
খাদ্য সুরক্ষা দফতরে হানা। ছবি: অরিন্দম বসু
আরও পড়ুন: অন্ধকার কাটিয়ে আলোর আশায় লড়াই হাওড়ার সুচরিতার
বৃহস্পতিবার দুপুরে হাওড়া জেলা খাদ্য সুরক্ষা দপ্তরের নেতৃত্বে হাওড়া পুরসভা, সুইড, কনজিউমার অ্যাফেয়ার্স, লিগ্যাল মেট্রোলজি সহ বেশ কয়েকটি কারখানায় যৌথভাবে অভিযান চালায় তারা। দেখা যায়, বেশ কিছু জায়গায় চরম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলছে পানীয় জল বোতলে ভরার প্রক্রিয়া। খাদ্য সুরক্ষা বিভাগ সূত্রে খবর, বড় বড় ড্রামে জমিয়ে রাখা হয়েছে জল। সেই জলে খেলে বেড়াচ্ছে মশার লার্ভা। এই ভয়ানক পরিস্থিতি দেখে চোখ কপালে ওঠে অভিযানকারী পদস্থ সরকারি আধিকারিকদের।
আরও পড়ুন: একদিনের ডিসি! ট্র্যাফিকের দায়িত্ব সামলাবে হাওড়ার এই কন্যা
প্রাথমিকভাবে হাওড়ার মালিপাঁচঘড়ার জে এন মুখার্জী রোড, লিলুয়ার গদাধর ভট্ট রোড এবং ডোমজুড়ের জালান কমপ্লেক্সের কয়েকটি কারখানায় এই অভিযান চলে। এইসব কারখানাগুলি থেকে অফিসাররা জলের নমুনা সংগ্রহ করেন। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে এখানে কারখানায় জল বোতলে ভরে তা বাজারে ছাড়া হচ্ছিল। এই অভিযোগ পাওয়ার পরই বৃহস্পতিবার অতর্কিতে হানা দেওয়া হয় খাদ্য সুরক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে। আপাতত এই সব নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।
অভিযানে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ছবি: অরিন্দম বসু
এই প্রসঙ্গে জেলা খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক বিশ্বজিৎ মান্না বলেন, "ভবিষ্যতেও এই ধরনের অভিযান চলবে। জলের নমুনা সংগ্রহের পর সেগুলি পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে এবং গাফিলতির প্রমাণ মিললে ভবিষ্যতে এই জলের কারখানাগুলি বন্ধ করে দেওয়া হবে।"
বর্তমানে অধিকাংশ হাওড়াবাসীই জল কিনে খান, এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে নামী কোম্পানির বদলে স্থানীয় বোতলবন্দি জলের ওপরেই ভরসা করেন তাঁরা। মানুষের সেই ভরসার সুযোগ নিয়ে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী কাযর্ত মানুষের জীবন নিয়েই ছিনিমিনি খেলছে, এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীর।