দশ ফুট বাই দশ ফুটের বাড়িতে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। নেই অর্থ। তবে যা আছে তা হল মেধা এবং অদম্য ইচ্চাশক্তি। সেই মেধার জোরে এবং ইচ্ছাশক্তির ছটায় ম্লান হয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎও। লড়াইয়ের এই সত্য কাহিনি যাঁকে কেন্দ্র করে, তিনি সুচরিতা। হতদরিদ্র ঘরের মেয়েটা রাস্তার পোস্টের আলোয় লেখাপড়া করেই উচ্চ মাধ্যমিকে ৮১ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন।
আরও পড়ুন- অনাদরে বঙ্কিমচন্দ্রের হাওড়ার বাড়ি, অর্থ মিললেও তৈরি হল না সংগ্রহশালা
শত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধেও বই-খাতা নিয়ে বসে রয়েছে মেয়েটা। হাওড়ার বাঙাল পাড়ার ছোট্ট বাড়িতে বিংশ শতাব্দীতেও নেই বিদ্যুৎ। চারপাশের আলো ঝলমলে পরিবেশের মাঝে গাঢ় অন্ধকারে ঢাকা থাকে সুচরিতাদের বাড়ি। পেশায় রংমিস্ত্রি বাবার রোজগারও সামান্য। ইদানীং শারীরিক সমস্যার কারণে সেই কাজও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সুচরিতাদের সংসার এখন প্রায় চলেই না। তাই চাকরি পাওয়ার জন্য অদম্য জেদে রাস্তার আলোয় পড়াশুনো করেন সুচরিতা।
প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে লড়াই জারি সুচরিতার। ছবি- অরিন্দম বসু
হাওড়ার বাঙালপাড়া ফার্স্ট বাইলেনের বাসিন্দা সুচরিতার পরিবারে সামান্য আয়েই কোনওমতে দু বেলার অন্ন সংস্থান চলে। সংসারের এই আর্থিক অনটনের মধ্যেই মেয়ের এমন লেখাপড়া এবং প্রত্যয়ী মানসিকতা আলো ফুটিয়েছে মা বাবার মুখে। সুচরিতা বলছেন, "পড়াশুনা করে একটা চাকরি পেতে চাই। আর কিছু নয়, একটা আলো পেলে সুবিধা হয় লেখাপড়া করতে"। ছেঁড়া জুতো, কারও ফেলে দেওয়া বই নিয়েই স্কুলের পড়াশুনা চালিয়ে গিয়েছেন সুচরিতা। স্কুলের গন্ডি পার করে এখন তিনি কলেজ পড়ুয়া। অভাবের সংসারে দু'বেলা ভরপেট ভাত জোটে না। তাই জল, মুড়ি, বিস্কুট খেয়েই কলেজে যায় মেয়ে। মেয়ের কষ্ট দেখে চোখ ঝাপসা হয়ে আসে বাবা-মায়ের। তবে মেয়ের চোখের দৃষ্টি স্বচ্ছ।
হাওড়ার সব খবর পড়ুন এখানে