Advertisment

বাবা-মায়ের সঙ্গে গেলেই রেস্তোরাঁয় ২০% ছাড়!

এই ঘোষণা ছড়িয়ে পড়তেই ওই রেস্তোরাঁয় বয়স্ক বাবা-মায়েদের সঙ্গে নিয়ে হাজির হচ্ছেন সন্তানেরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
howrah uluberia

রেস্তোরাঁয় বাবা-মাকে নিয়ে হাজির এক পরিবার।

কোলে-পিঠে সন্তানকে মানুষ করেন বাবা-মা। সেই বাবা-মায়ের বয়স হলেই তাঁরা যেন সন্তানের বোঝা হয়ে ওঠেন। অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের স্থান হয় বৃদ্ধাশ্রমে। নানাভাবে অবহেলিত হচ্ছেন জন্মদাতা-জন্মদাত্রী। এই ধারণা সমাজে ক্রমশ বদ্ধমূল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এসব কারণে নানা আইনের বেড়াজালে বাধার চেষ্টা হচ্ছে অবাধ্য সন্তানদের। কিন্তু হাওড়ার উলুবেড়িয়ার এক রেস্তোরাঁর মালিক বৃদ্ধ বাবা-মায়েদের নিয়েই ভেবেছেন একেবারে অন্য ভাবনা। ওই রেস্তোরাঁয় বৃদ্ধ বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে লাঞ্চ বা ডিনার করলেই মিলবে ২০ শতাংশ ছাড়। এই ঘোষণা ছড়িয়ে পড়তেই ওই রেস্তোরাঁয় বয়স্ক বাবা-মায়েদের সঙ্গে নিয়ে হাজির হচ্ছেন সন্তানেরা।

কী ভাবে এল এই ভাবনা? কী বলছেন রোস্তারাঁর মালিক? মালিক সমীরণ গোস্বামী বলেন, "অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি সাধারণত কর্তা-গিন্নিরা রেস্তোরাঁয় আসেন। তাঁদের সঙ্গে বয়স্ক বাবা-মায়েদের দেখা যায় না। তাছাড়া বাবা-মায়েদের প্রতি ছেলে-মেয়েদের দায়বদ্ধতাও অনেক কমে যাচ্ছে। আমরা সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি। এইরকম চিন্তা-ভাবনা থেকেই বিষয়টা মাথায় এসেছিল। এর দুটো দিক আছে। একটা সামাজিক আর একটা ব্যবসায়িক।"

উলুবেড়িয়ার এই রেস্তোরাঁর আবেদনে অনেকেই সেখানে হাজির হচ্ছেন। সমীরণবাবু বলেন, "বেশ ভাল সাড়া পাচ্ছি। বাবা-মা এবং ছেলে-মেয়েদের এক টেবিল-এ আনতে পেরে মানসিকভাবেও শান্তিও পাচ্ছি।" তিনি জানান, বাবা-মায়েদের সঙ্গে নিয়ে এলেই আমরা লাঞ্চ ও ডিনারে মোট বিলের ওপর ২০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছি। ফলস্বরূপ এক টেবিলে বাবা-মা-ছেলে-মেয়ে-নাতি-নাতনি চেখে দেখছে হরেক মেনু।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সাল থেকে উলুবেড়িয়ার বাজারপাড়া স্টেডিয়াম মাঠ এলাকায় চালু হয়েছে এই রেস্তোরাঁ। এতদিন নানা ধরনের অফার চলেছে। কতৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত নতুন মা-বাবা সহ এলে ২০ শতাংশের ছাড়ের অফার জারি থাকবে। চলতি বছর ২৩ জানুয়ারি অর্থাৎ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম দিন থেকে শুরু হয়েছে এই বিশেষ অফার।

বয়স হলে সমাজ নয়, সব থেকে বড় আঘাত আসে পরিবার থেকেই। অর্থাৎ সন্তান-সন্ততির কাছ থেকে। কথায় আছে, ভাগের মা গঙ্গা পায় না। কিন্তু এক সন্তানের জনক-জননীর জীবনও অনেক ক্ষেত্রেই বিষময় হয়ে ওঠে। তাছাড়া অনেক ছেলে-মেয়েই আজ প্রবাসী। জীবনযাত্রা যত আধুনিকতর হচ্ছে, তত বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যাও বাড়ছে। নীরব কান্নাই তাই নিত্য সঙ্গী বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের। সব ক্ষেত্রে অর্থাভাব না থাকলেও নিঃসঙ্গ জীবনে হাঁপিয়ে ওঠেন বৃদ্ধেরা। ছেলে-মেয়ে তো বটেই এমনকী নাতি-নাতনিদের স্পর্শও অধরা থাকে যায় অনেকের। সেই সব প্রবীণ-প্রবীণাদের কথাই ভেবেছে উলুবেড়িয়ার এই রেস্তোরাঁ।

Howrah
Advertisment