লাগানোর প্রস্তুতি তুঙ্গে। 'হর ঘর তিরঙ্গা' শীর্ষক সেই উদ্যোগকে সফল করতে ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে জোরদার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। জাতীয় পতাকার চাহিদা এখন তুঙ্গে। পাহাড়-প্রমাণ সেই চাহিদা মেটাতে এখন নাওয়া-খাওয়ার ফুরসত নেই হাওড়ার উনসানির হালদার বাড়ির সদস্যদের।
Advertisment
দিন-রাত এক করে চলছে কর্মযজ্ঞ। প্রতিদিন ভোর থেকে প্রায় মাঝ রাত পর্যন্ত হাজার-হাজার জাতীয় পতাকা তৈরির কাজ চলছে উনসানির হালদার বাড়িতে। ১৯৪৭-এর ১৫ অগস্টের সময় থেকেই জাতীয় পতাকা তৈরির কাজ শুরু করেন হাওড়ার উনসানির বাসিন্দা নূর জামান হালদার। সেদিনের সেই কর্মকাণ্ডকে বর্তমানে নূর জামানের ছেলে রাজু হালদার এগিয়ে নিয়ে চলেছেন।
সাঁতরাগাছি ছাড়িয়ে ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের দিকে কিছুটা এগিয়ে কাউকে জিজ্ঞাসা করলে তিনিই দেখিয়ে দেবেন তেরঙায় রাঙানো বাড়িটি। শুধু পশ্চিমবঙ্গই নয়। অসম, ত্রিপুরা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা থেকেও হাজার-হাজার জাতীয় পতাকা তৈরির বরাত পেয়েছেন রাজু হালদার। এবছর স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি। কেন্দ্রীয় সরকার 'আজাদি কা অমৃত মহোৎসব' পালন করছে।
ঘরে-ঘরে জাতীয় পতাকা তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই কারণেও এবার জাতীয় পতাকার চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। উনসানির রাজু ত্রিপুরা থেকে অন্যান্য বছর ২০ হাজার জাতীয় পতাকা তৈরির বরাত পান। তবে এবছর সেই বরাত বেড়ে হয়েছে ৩০ হাজার।
অসম থেকে ফি বছর ২৫ হাজার জাতীয় পতাকা পাঠানোর অর্ডার থাকে। এবার সেটা বেড়ে হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার। বর্তমানে বাজার ছেয়ে গিয়েছে রঙিন কাপড়ে। সেই কারণে আর আগের মতো সাদা কাপড় কিনে আলাদা করে রঙে চুবিয়ে রাঙিয়ে তুলতে হয় না রাজুদের। যদিও আগের চেয়ে এখন কাপড়ের দাম বেড়েছে অনেকটাই।
করোনাকালে দু'বছর জাতীয় পতাকার চাহিদা কম থাকলেও এই বছর মাত্রাতিরিক্তভাবে বেড়ে গিয়েছে চাহিদা। ছোটো-বড় মিলিয়ে মোট ১৩টি মাপের জাতীয় পতাকা তৈরি করেন রাজু। নিজেদের এই পেশা সম্পর্কে রাজু বলেন, ''দেশ ভাগের সময়ে তেরঙা বানানো নিয়ে একটি আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল বাবার মনে। উনসানির বাসিন্দারা বাবাকে হাওড়া ছেড়ে যেতে দেননি। সেই থেকে আজও বংশ পরম্পরায় তেরঙা পতাকা বানানোর কাজ করে চলেছি আমরা।''