গ্রামের বাড়িতে ঘুরতে আসাই কাল হল। গ্রামর বাড়িতে এসে খুন হলেন হাওড়ার ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডল(৪৪)। শুক্রবার রাতে চাঞ্চল্যকর এই ঘটেছে পূর্ব-বর্ধমানের রায়না থানার দেরিয়াপুর গ্রামে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। ব্যবসায়ীর গাড়ির চালক ও রাঁধুনিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ।
তবে কারা কী কারণে ব্যবসায়ীকে খুন করা হল, তা এখনও ধোঁয়াশা। ব্যক্তিগত কারণ, নাকি ব্যবসায়ীক শত্রুতা? খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডলের দেশের বাড়ি রায়নার দেরিয়াপুর গ্রামে। বর্তমানে তিনি ও তাঁর পরিবার থাকেন হাওড়ার শিবপুরে। সেখানে তাঁর পলিথিন সামগ্রীর ব্যবসা রয়েছে।
শুক্রবার সব্যসাচী মণ্ডল তাঁর এক বন্ধু নাজবীর সিংকে সঙ্গে নিয়ে দেরিয়াপুর গ্রামের দেশ বাড়িতে বেড়াতে আসেন। রাতে দেশের বাড়ির ছাদে রান্না চলছিলো। নাজবীর সিংয়ের কথায় জানা গিয়েছে, রান্না যখন চলছিল তখন ছাদেইই ছিলেন ওই সব্যসাচী। সেই সময়ে কেউ তাঁকে বাড়ির একতলায় নীচে ডাকছে বলে জানিয়ে সব্যসাচীর গাড়ির চালক। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ছাদে থেকে নীচে নেমে যান ব্যবসায়ী।
এর পর বেশ কিছুক্ষণ কেটে যায়। সব্যসাচীবাবুর খোঁজে নীচে নামেন বন্ধু নাজবীর। সেই সময়ই তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। জখম সব্যসাচীকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যান বলে দাবি বন্ধু নাজবীর সিং ও রাধুনি পার্থ সান্যালের। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডলকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে তদন্তে যায় রায়না থানার পুলিশ।
এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম খাঁন বলেছেন, 'ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ব্যবসায়ীর দেহের একাধিক জায়গায় আঘাতের ক্ষত রয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে বোঝা যাবে কী জাতীয় জিনিস দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। তদন্ত এখন একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।' তদন্তের স্বার্থে মৃতর পরিবার ও এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ।
এদিকে শনিবার বেলায় মৃতের বাবা দেবকুমার মণ্ডল বলেন সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদেই তাঁর ভাই ও ভাইপোরা ব্যবসায়ী সব্যসাচীকে খুন করেছে। দেবকুমারবাবিু রায়না থানায় তাঁর ছোট ভাই গৌরহরি মণ্ডল, ভাতৃবধু পূর্ণিমা মণ্ডল, ভাইপো দীনবন্ধু মণ্ডল ও সোমনাথ মণ্ডলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। দেবকুমার মণ্ডলের দাবি, 'পরিবারে সম্পত্তি নিয়ে চরম বিবাদ চলেছে। ২০১৬ সালে আমার মায়ের মৃত্যুর পর ভাইপোরা আমার ছেলেকে শ্মশানে বেধরক মারধর করেছিল। আমার ধারণা, দুই ভাইপো দীনবন্ধু এবং সোমনাথ সুপারি কিলার লাগিয়ে ছেলেকে গুলি করে কুপিয়ে খুন করিয়েছে।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন