HS Exam 2025: রান্না করতে করতে অকালমৃত্যু, মায়ের দেহ বাড়িতে রেখে উচ্চ মাধ্যমিক দিল 'সাহসী' ছেলে

Higher Secondary Exam 2025: নিত্যদিনের মতো সকালে উঠে ঘরের কাজ সারেন বীরভূমের বোলপুর সংলগ্ন রূপপুর গ্ৰামের গৃহবধূ। একমাত্র সন্তান পরীক্ষা দেবে। তাই রান্না করছিলেন। হঠাৎ তাঁর বুকে ব্যথা ওঠে। মাটিতে শুয়ে পড়েন তিনি। তাঁর মাথায় জল ঢালা হয়। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে মারা যান।

Higher Secondary Exam 2025: নিত্যদিনের মতো সকালে উঠে ঘরের কাজ সারেন বীরভূমের বোলপুর সংলগ্ন রূপপুর গ্ৰামের গৃহবধূ। একমাত্র সন্তান পরীক্ষা দেবে। তাই রান্না করছিলেন। হঠাৎ তাঁর বুকে ব্যথা ওঠে। মাটিতে শুয়ে পড়েন তিনি। তাঁর মাথায় জল ঢালা হয়। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে মারা যান।

author-image
Ashis Kumar Mondal
New Update
HS Student: প্রায় ২ ঘন্টা পরীক্ষা দিয়ে রূপঙ্কর বাড়ি ফিরে মায়ের শেষ কাজ করে

HS Student: প্রায় ২ ঘন্টা পরীক্ষা দিয়ে রূপঙ্কর বাড়ি ফিরে মায়ের শেষ কাজ করে

Higher Secondary Exam 2025: মায়ের মরা মুখ দেখে যে ছেলেকে পরীক্ষা দিতে যেতে হয়, তার মতো অভাগাজন কে বা আছে! সব কিছু ঠিকঠাক চলছিল। সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠে, পরীক্ষা ছাড়া আর কোনও কিছু তার জন্য প্রস্তুত ছিল না। জীবনের এত বড় পরীক্ষা, আর সেদিনই ভাগ্যের এমন নির্মম পরিহাস তার জন্য বোধহয় অপেক্ষায় ছিল। 

Advertisment

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রূপঙ্কর ভাদুড়ির  সোমবার ছিল দর্শনের পরীক্ষা। বিনুরিয়া নীরদ বরণ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল সে। ‌পরীক্ষা কেন্দ্র বোলপুরের বিবেকানন্দ উচ্চ বিদ্যালয়। মৃতার নাম অঞ্জু ভাদুরি (৪৫)। নিত্যদিনের মতো সকালে উঠে ঘরের কাজ সারেন বীরভূমের বোলপুর সংলগ্ন রূপপুর গ্ৰামের গৃহবধূ। একমাত্র সন্তান পরীক্ষা দেবে। তাই রান্না করছিলেন। হঠাৎ তাঁর বুকে ব্যথা ওঠে। মাটিতে শুয়ে পড়েন তিনি। তাঁর মাথায় জল ঢালা হয়। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে মারা যান। 

বাবা বিপদতারণ ভাদুড়ি একজন প্রান্তিক চাষি। তিনি জানান, কোনও অসুখ ছিল না। হঠাৎ সব কী হয়ে গেল। পরীক্ষার্থীর জ্যেঠু মধুসূদন ভাদুড়ি বলেন, ‘বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো সব কিছু ঘটল। ছেলেটি তো মাটিতেই মায়ের কাছে শুয়ে পড়ে। পরীক্ষা দেবে না বলছিল। তারপর স্কুলের মাস্টারমশাইরা এসে তাঁকে বোঝানোর পর সে পরীক্ষা দিতে রাজি হয়। মায়ের মৃতদেহ পারলৌকিক ক্রিয়ার জন্য অপেক্ষায় ছিল অনেকক্ষণ। প্রায় ২ ঘন্টা পরীক্ষা দিয়ে রূপঙ্কর বাড়ি ফিরে মায়ের শেষ কাজ করে। মাকে শেষ বিদায় জানায়।’

বিনুরিয়া নীরদবরণ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সন্ধ্যা দাস রায় বলেন, ‘এমন মর্মন্তুদ ঘটনা যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। ঘটনাটা জানার পরই দুই জন সহ-শিক্ষক স্কুলের তরফে ছাত্রটির বাড়ি যান। তাঁরাই তাকে বুঝিয়ে পরীক্ষা দিতে রাজি করান। সে পরীক্ষা দিয়েছে। আমি হলে পারতাম না। তার সাহসের তুলনা হয় না। আমি তাকে কুর্ণিশ জানাই। তার পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে আমরা অপেক্ষায় ছিলাম এবং তার সঙ্গে তার বাড়িও যাই।’

Advertisment

আরও পড়ুন উচ্চমাধ্যমিকে নকলে বাধা পেয়ে রেগে 'আগুন' ছাত্ররা, ফেলে মার শিক্ষকদের

পরীক্ষা কেন্দ্র বোলপুরের বিবেকানন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তথা সেন্টার ইন-চার্জ শুভ্রা ঘোষ বলেন, ‘ছেলে পরীক্ষা দেবে। তার জন্য মা ভাত রান্না করছেন। এমন সুস্থ স্বাভাবিক মা এভাবে অসময়ে হঠাৎ চলে গেলেন। সেই দু্ঃখ নিয়ে দুই ঘন্টা পরীক্ষা দিয়েছে সে। আমরা আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করেছিলাম। সে রাজি হয়নি। সবার সঙ্গে পরীক্ষা দিয়েছে। এবং ভাল পরীক্ষা দিয়েছে।’ 

উল্লেখ্য, সামনে এখনও কতগুলো পরীক্ষা আছে। পরীক্ষার্থীর বাবাও ঘটনার আচম্বিতে কার্যত দিশেহারা। একমাত্র ছেলে মাতৃহারা। তিনি বলেন, ‘ছেলে লিখবে কী করে? ওর মা যে আজই চলে গেল।’ এই মাতৃশোকের কোনও সান্ত্বনা, বাবার কাছেও নেই।

Bolpur West Bengal HS Exam west bengal latest news Birbhum West Bengal News