ছবির বাঁদিকে দিঘার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ভিড়। ডানদিকে, শনিবার সকালে দিঘা স্টেশনের ছবি। ছবিটি তুলেছেন কৌশিক দাস।
শনি, রবি ও আগামী সোমবারের স্বাধীনতা দিবসের ছুটি। সব মিলিয়ে একটানা তিন দিনের ছুটি মিলেছে। সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ ভ্রমণপ্রিয় বাঙালি। কাছেপিঠের দিঘায় তাই উপচে পড়া ভিড়। কাতারে-কাতারে পর্যটকে পূর্ণ সৈকতনগরী। তিল ধারনের জায়গা নেই সমুদ্র পাড়ে। দিঘার অধিকাংশ হোটেলের বুকিং কানায়-কানায় পূর্ণ।
Advertisment
গত দু'বছরে করোনার জেরে ব্যাপকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছিল পর্যটন ব্যবসা। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো দিঘার ক্ষেত্রে যোগ হয় একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে কার্যত তছনছ হয় দিঘা। তবে রাজ্য সরকারের সহযোগিতা ও স্থানীয়দের প্রবল আগ্রহের জেরে আবারও নতুন সাজে সেজে উঠেছে দিঘা। করোনার প্রকোপ কমতে শুরু করার পর থেকেই দিঘায় পর্যটকদের ঢল নামতে শুরু করে।
দিঘার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ভিড়। ছবি: কৌশিক দাস।
Advertisment
এবার আবার একটানা তিন দিনের ছুটি। এমনিতেই উইকএন্ডে দিঘায় পর্যটকদের ভিড় বেশি থাকে। এবার উইকেন্ড ছাপিয়ে বাড়তি পাওনা সোমবার স্বাধীনতা দিবসের ছুটি। বলা বাহুল্য এবার যেন বাঙালির একাংশ দিঘার সমুদ্র পাড় থেকেই দেশের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস পালন করবেন।
শনিবার সকাল থেকে দিঘায় বিপুল ভিড় পর্যটকদের। রেল স্টেশন, বাস স্টপেজে তিল ধারনের জায়গা নেই। আগেভাগেই হোটেলের বুকিং সেরে রাখা পর্যটকরা লাগেজ নিয়ে সটান হোটেল যাওয়ার গাড়ি খুঁজছেন। তবে আগে থেকে হোটেল বুক না করে আসা পর্যটকদের অধিকাংশই পড়ছেন ঘোর বিপদে। অনেকেই পাচ্ছেন না থাকার জায়গা। দিঘার হোটেল ব্যবসায়ীদের তরফে জানা গিয়েছে, সমুদ্রনগরীর অধিকাংশ হোটেলই ১৩ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বুক হয়ে রয়েছে।
কলকাতার ডানলপ থেকে দিঘা বেড়াতে এসেছেন সমীর রায়। তিনি জানিয়েছেন, অনেক খুঁজে একটা হোটেল তিনি পেয়েছেন। তবে হোটেলের ঘরের মানের চেয়ে ভাড়া অত্যন্ত বেশি দিতে হচ্ছে তাঁকে। এদিকে, শনিবার দিঘার সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস বেশি থাকায় প্রশাসনও সতর্ক রয়েছে। বিপদের আশঙ্কায় সমুদ্রে নামতে দেওয়া হচ্ছে না পর্যটকদের। ফলে সমুদ্রের পাড়ে বসেই মন ভরাচ্ছেন পর্যটকরা।
হলদিয়া থেকে দিঘা ঘুরতে এসেছেন তনুশ্রী দাস। টানা তিন দিন ছুটি পেয়েই তিনি দিঘা এসেছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ''দিঘায় এসে সমুদ্রে নেমে স্নান করতে না পারায় মনটা খুব খারাপ। তবে আরও দু'দিন দিঘায় থাকছি। তার মাঝে যদি সুযোগ হয় সমুদ্রে নামবই।''
দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের এক্সিকিউটিভ অফিসার মানস কুমার মণ্ডল জানিয়েছেন, প্রতি শনি ও রবিবার পর্যটকদের ভিড় বাড়ে। তবে এবার টানা তিন দিনের ছুটি থাকায় দিঘায় পর্যটকদের ভিড় অনেক গুণ বেড়ে গিয়েছে। তবে পর্যটকদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেদিকে তাঁরা নজর রাখছেন।