ভ্যাকসিন নিতেই শরীরে তৈরি হচ্ছে চৌম্বকক্ষেত্র। আর চুম্বক টেনে নিচ্ছে ধাতব বস্তুকে। গায়ে সেঁটে থাকছে চামচ, হাতা, কয়েন। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের নাসিক, বাংলার শিলিগুড়ি, হুগলি এবং কাটোয়ায় এই দাবি করে একাধিক ব্যক্তি ভাইরাল হয়েছে। তাঁদের বাড়ি গিয়ে দেখা গিয়েছে গায়ে ধাতব বস্তু লাগিয়েই ক্যামেরার সামনে পোজ দিচ্ছেন তাঁরা। নড়াচড়া করলেও খসে পড়ছে না সেই চামচ, কয়েন, হাতা। এমন ঘটনায় করোনা টিকা কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। স্পষ্টতই মানুষের মধ্যে সন্দেহ দানা বাঁধে।
কিন্তু চিকিৎসকরা প্রথম থেকেই বলে আসছেন, এই ঘটনা ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নয়। তাই যদি হত, তাহলে হিউম্যান ট্রায়ালেই ধরা পড়ত। এবার সেই একই দাবিতে সরব পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ। তাঁদের যুক্তি, বর্ষাকালে আদ্রতা বেশি থাকলে শরীরে ঘাম হয়। সেই ঘামেই আটকে যাচ্ছে চামচ, হাতা, কয়েন। ঘামের জেরে শরীর থেকে নির্গত বাষ্প এই ধাতব বস্তুকে গায়ের সঙ্গে আটকে রাখছে। যেহেতু এই বস্তুগুলোয় খাঁজ আছে, ফলে সহজেই ঘামের সঙ্গে লেপ্টে থাকতে পারছে।
এর পিছনে কোনও কুসংস্কার বা টিকার অপকারিতা জড়িয়ে নেই। যারা এই দাবি করছেন, তাঁরা মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। এদিকে, কাটোয়ার সমীর চক্রবর্তী একই দাবিতে সরব হয়েছিলেন। পয়লা জুন তিনি টিকা নেওয়ার পর থেকেই তাঁর গায়ে ধাতব বস্তু এমনকি মোবাইল পর্যন্ত সেঁটে থাকছিল।
সেই দাবির পিছনে কতটা যুক্তি, তা প্রমাণ হল মঙ্গলবার। সেই ব্যক্তির শরীরে আটকে থাকা ধাতব বস্তু খুলে, তাঁকে পাউডার মাখানো হয়। তারপর সেই বস্তুগুলো আটকাতে গেলে তা খসে পড়তে শুরু করে। অর্থাৎ পাউডারেই উধাও ‘চৌম্বকশক্তি’ এমনটাই মন্তব্য বিজ্ঞান মঞ্চের। ঘুরিয়ে ঘামের তত্ত্বই প্রতিষ্ঠিত কাটোয়ার ঘটনায়। এমনটাই দাবি বিশেষজ্ঞদের।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন