২০১৯ সালে রাজ্যে পুলিশে কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতার অভিযোগে এবার গোটা প্যানেলই বাতিল করে করল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ।
কী অভিযোগ?
রাজ্য সরকারের তরফে ২০১৯ সালে রাজ্য পুলিশে কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালের ২৬ মার্চ একটি প্যানেল প্রকাশ করে রাজ্য পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড। মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ ছিল নিয়োগের ক্ষেত্রে অস্বচ্ছতা হয়েছে। পুলিশের চাকরির ইন্টারভিউয়ের আগেই কিছু পরীক্ষার্থীর হোয়াট্সঅ্যাপে পৌঁছেছিল গোপন খবর। কারা ইন্টারভিউ বোর্ডে থাকবেন, কারা প্রশ্ন করবেন, সেই তথ্য জানতে পেরেছিলেন কিছু পরীক্ষার্থী। পরে মেধাতালিকা প্রকাশের পরও দেখা যায় বেশ কিছু অনিয়ম রয়েছে। ফলে ২০২২ সালে স্টেট ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেন তাঁরা। চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল ৮,৪১৯ জন পুলিশ কনস্টেবলের নিয়োগকে।
মামলাকারীদের দাবি-
মামলাকারীদের দাবি ছিল, যে হেতু পুলিশে নিয়োগের চাকরিতে দুর্নীতি হয়েছে, তাই গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াটাই খারিজ করতে হবে। পাশাপাশি, সংরক্ষিত চাকরিপ্রার্থীদের জন্য আলাদা তালিকাও প্রকাশ করতে হবে।
স্টেট ট্রাইবুনালের নির্দেশ-
ট্রাইবুনাল পুলিশ কনস্টেবলদের নিয়োগ সংক্রান্ত ত্রুটি শুধরানোর নির্দেশ দিয়েছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডকে। এর পরেই প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় মেধা তালিকা।
এরপরই রাজ্যের তালিকা খারিজ করে ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ দেওয়া ছিল, যারা সংরক্ষিত শ্রেণির প্রার্থী নয় তাদের জন্য আলাদা তালিকা বানাতে হবে চার সপ্তাহের মধ্যে।
কী নির্দেশ আদালতের?
রাজ্য ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ মতো রাজ্য পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড নতুন তালিকা প্রকাশ করে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। যেখানে পুরনো তালিকার ১৩৭ জনকে বাদ দেওয়া হয় নতুন তালিকায়। পাশাপাশি আরও ২১৭ জন চাকরিতে যোগ দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে বলে জানান রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল। কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ সব কিছু খতিয়ে দেখে নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি করে।
এদিন প্রধান বিচারপতির টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্রাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশে জানিয়েছে, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ রাজ্য পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড যে প্যানেল প্রকাশ করেছিল তা অপরিবর্তিত থাকবে।পাশাপাশি ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ খারিজ করা হয়। একইসঙ্গে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ট্রাইব্যুনালের নির্দেশের ফলে যেহেতু নিয়োগ স্থগিত হয়েছিল তাই সিনিয়রিটির ভিত্তিতে নিয়োগ করতে হবে। এছাড়া, প্রধান বিচারপতির ডিভইশন বেঞ্চের নির্দেশ, যে ১৭০ জনকে ইতিমধ্যে নিয়োগ করেছিল রাজ্য তাদের চাকরি বাতিল না করে অন্যত্র চাকরিতে নিযুক্ত করতে হবে।