রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় ফেললেন মুকুল রায়। একটি সংবাদমাধ্যমে মুখ খুললেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। 'বিজেপিতেই রাজনীতি করব, বর্তমান পরিস্থিতিতে শুভ্রাংশুরও বিজেপি করলেই ভালো।' মুকুল রায়ের মন্তব্য ঘিরে বেনজির চর্চা বঙ্গ রাজনীতির আঙিনায়। এমনকী অমিত শাহ, জেপি নাড্ডাদের সঙ্গে তিনি দেখা করবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন।
ফের চর্চায় মুকুল রায়। সোমবার সন্ধের পর আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যান প্রাক্তন রেলমন্ত্রী। রাতে দিল্লি বিমানবন্দরে তাঁকে দেখা যায়। এদিকে বাবা মুকুল রায়ের খোঁজে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পুত্র শুভ্রাংশু রায়। মঙ্গলবার দিনভর মুকুল রায়কে নিয়ে জোরদার চর্চা চলেছে। মঙ্গলবার রাতে একটি সংবাদমাধ্যমকে মুকুল রায় যা বললেন তাতে আবারও সব ফোকাস ঘুরে গেল তাঁর দিকেই।
কী বলেছেন মুকুল রায়?
তিনি বলেন, 'বিজেপিতেই রাজনীতি করব। আমিত শাহের সঙ্গে দেখা করব। জেপি নাড্ডার সঙ্গেও কথা বলব। কেউ জোর করেনি, স্বেচ্ছায় দিল্লি এসেছি। একটু অসুস্থ ছিলাম বলে পুরোদস্তুর রাজনীতি করতে পারিনি। এখন শরীর ভালো, রাজনীতি করব।' এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। পুত্র শুভ্রাংশুর রাজনৈতিক জীবন নিয়েও নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন মুকুল। তাঁর কথায়, 'শুভ্রাংশুরও বিজেপিতে যোগ দেওয়া উচিত। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজেপি করলেই শুভ্রাংশুর ভালো। আমি কোনওদিন তৃণমূল করিনি। আমি বিজেপিরই বিধায়ক। বিজেপি বিধায়ক হিসেবে এখানে থাকার ব্যবস্থা দলের। ১০০ শতাংশ নিশ্চিত, তৃণমূল আর করব না।'
আরও পড়ুন- ‘অসুস্থ’ মকুলের সঙ্গে কী আচরণ করেন ছেলে শুভ্রাংশু? অত্যন্ত ‘বেদনাদায়ক’ ইঙ্গিত সুকান্তর!
উল্লেখ্য, একুশের নির্বাচনে তৃণমূল তৃতীয়বার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফেরার পরপরই ছেলে শুভ্রাংশুকে নিয়ে আবারও জোড়াফুলে ফেরেন মুকুল রায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যেপাধ্যায়দের উপস্থিতিতে পুরনো দলে ফেরেন তিনি। যদিও তৃণমূলে ফেরা ইস্তক দলের বড় কোনও কর্মসূচিতে সেভাবে সক্রিয়ভাবে তাঁকে অংশ নিতে দেখা যায়নি। এরই মধ্যে তাঁর স্ত্রী বিয়োগ হয়। নিজের শরীরও বেশ খারাপ হয়েছিল। হাসপাতালে পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে তাঁকে। তবে তাঁর দলবদল নিয়ে এতদিন সেভাবে জল্পনা ছড়ায়নি। যা ছড়াল সোমবার সন্ধের পর থেকে।
আরও পড়ুন- মুকুল-শুভ্রাংশুদের ‘পাত্তাই’ দিচ্ছে না তৃণমূল! আজ কুণাল যা বললেন…
বাবা যাই বলুন, ছেলে শুভ্রাংশু কিন্তু তৃণমূলে থাকতেই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সোমবার সন্ধেয় আচমকা মুকুল রায়ের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার খবর চাউর হয়। যদিও পরে দেখা যায় দিল্লি বিমানবন্দরে নেমেছেন তিনি। এবিষয়ে তাঁর পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের দাবি, ‘আমি এয়ারপোর্ট এবং থানাকে চিঠি লিখেছিলাম। জানিয়েছি, দু’জন আমাকে না জানিয়ে বাবাকে নিয়ে চলে গিয়েছেন। আমি থানার আইসি এবং এরায়পোর্টের ম্যানেজারকেও বলেছিলাম বাবাকে বিমান থেকে নামিয়ে আনতে। কিন্তু তা হয়নি।’
এরই পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চক্রান্ত হচ্ছে বলেও দাবি করেন শুভ্রাংশু। তাঁর কথায়, 'আমার ব্যক্তিগত মত, অভিষেককে হেয় প্রতিপন্ন করতেই কোনও একটি রাজনৈতিক দল খেলায় নেমেছে। কারণ এখন নিশানা অভিষেক। তিনিই দলটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।’