মুকুল রায় বিজেপিরই বিধায়ক। কয়েক সপ্তাহ আগেই বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। পিএসি চেয়ারম্যান বিতর্কের সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দাবি করেছিলেন যে, মুকুল রায় বিজেপির বিধায়ক। বিরোধী দলের হওয়ায় মুকুল রায়ের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নকেও তেমন গুরুত্ব দিতে রাজি ছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী। যদিও তারপর পিএসি-র চেয়ারম্যার পদে আর ফেরানো হয়নি কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ককে। এসবের মধ্যেই সোমবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে বিধানসভায় এসেছিলেন মুকুল রায়। সেখানে পদ্ম-ফুলের এই প্রবীণতম বিধায়কের দাবি ঘিরে ফের বিভ্রান্তি তৈরি হল।
এদিন বিধানসভা রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পর্বের শেষ বেলায় ভোট দেন মুকুল রায়। কিন্তু কাকে দিলেন? তা নিয়েই নানা চর্চা। বিধানসভা ছাড়ার সময় মুকুল রায়কে জিজ্ঞাসা করা হয় তিনি কাকে ভোট দিলেন? জবাবে তিনি সাফ বলেন 'আমি তৃণমূলের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছি।' কী হতে পারে রাষ্ট্রপতি ভোটের ফল? মুকুরের দাবি, 'সবাই জানেন কী হবে। আমি মমতার প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছি।'
মুকুল রায় তো বিজেপির বিধায়ক, তাহলে কেন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীকে ভোট দিলেন তিনি? মুকুলের সটান জবাব, 'আমি বিজেপির কেউ নই।'
রাষ্ট্রপতি ভোটে ক্রস ভোটিংয়ের আশঙ্কা করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এপ্রসঙ্গে মুকুল রায় বলেন, 'সব বাজে কথা, কোনও ক্রস ভোট হবে না।'
আরও পড়ুন- তৃণমূল-বিজেপি জোর আকচা-আকচি, বিরাট শোরগোল বিধানসভায়
কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি মুকুল রায় পদ্ম-ফুল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন বলে দাবি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। এরপরই অধ্যক্ষের কাছে প্রমাণ-নথি সহ মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের দাবি তোলেন শুভেন্দু। এসবের মধ্যেই বিজেপির এই বিধায়ককেই পিএসি চেয়ারম্যান মনোনিত করেছিলেন অধ্যক্ষ। যা নিয়েও সরব হন বিজেপি বিধায়করা। মামলা গড়ায় আদালতে। শেষ পর্যন্ত আদালত বিধানসভার অধ্যক্ষকেই মুকুল রায়ের পদ খারিজ সংক্রান্ত মামলার রায়দানের ভার দেয়। অধ্যক্ষ সাফ জানিয়ে দেন, মুকুল রায় বিজেপির বিধায়ক। বিধানসভার বাইরে তিনি কী করেছেন, কোথায় গিয়েছেন সেটা বিধানসভার অন্দরে বিবেচ্য নয়।
এসবের মধ্যেই পুরভোটের সময় অবশ্য মুকুল রায় দাবি করেছিলেন যে, 'বিজেপিই জিতবে।' এমনকী অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়িয়েও একই ঘোষণা করেছিলেন। সেই সময়ই একফাঁকে বলেছিলেন, 'তৃণমূল মানেই বিজেপি।' যা ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে যায়। পরে, তাঁর ঘনিষ্ঠমহল থেকে বলা হয়, মুকুল রায় অসুস্থ, মনে রাখতে অসুবিধা হয়। ফলে অসংলগ্ন কথা বলেন।
আরও পড়ুন- রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বাংলার তিন বিধায়কের ভোট পড়ল না