পাহাড় বনধের ডাক দিয়েছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও হামরো পার্টি। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর কড়া হঁশিয়ারির পরই ঢোক গিলেছেন বনধপন্থীরা। তড়িঘড়ি বনধ প্রত্যাহার করতে হয়েছে বিনয় তামাং, অজয় এডওয়ার্ডদের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধমকেই বনধপন্থীরা ফোঁস করেও থেমে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এসবের পর বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, 'আমি কাউকে ধমকাই না, আমি আবেদন করি।'
বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন বাংলা একের পর এক বনধ ডেকেছে তৃণমূল। কিন্তু ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসে বনধ নিয়ে অবস্থান বদল হয়েছে জোড়-ফুলের। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে রাজ্যের শাসক দল যেকোনও ধরণের বনধের বিরোধী। এ দিন শিলিগুড়িতে দাঁড়িয়ে সে কথা ফের স্মরণ করিয়ে
দিয়েছেন মমতা।
বনধের বিরুদ্ধে এদিন ফের মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ''আমরা কোনও বনধকেই সমর্থন করি না। 'বনধের রাজনীতি থেকে বাংলাকে অনেক আগেই মুক্ত করেছি। ২০১১ সালেই আমরা এই নিয়ে নীতি জানিয়েছিলাম। কাজের গতি থেমে গেলে উন্নয়নও স্তব্ধ হয়ে যায়। আমি চাই কাজ চলুক। আমি একা চলব আর কেই চলবে না এটা হতে পারে না। ১০টা লোক মিলে সব স্তব্ধ করে দেবে, আর পরীক্ষার্থী, রোগী থেকে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় আটকে পড়বেন তা হবে না।'
গত সোমবার বিধানসভায় পাশ হয় 'বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাব'। যার বিরোধীতায় ও গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে মঙ্গলবার ভানু ভবনের সামনে ২৪ ঘণ্টার জন্য অনশনে বসেন বিনয় তামাং, হামরো পার্টির প্রতিষ্ঠাতা অজয় এডওয়ার্ড-সহ জিটিএ-র ৭ সদস্য। আজ ১২ ঘণ্টার পাহাড় বনধের ডাকদেওয়া হয়েছিল। যদিও বিনয় তামাংদের দাবি, পাহাড়ে বনধ নয়, মানুষের কাছে তারা বাড়ি থেকে না বেরোনোর আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁরা।
মাধ্যমিক পরীক্ষার শুরুর দিনে বনধের ডাক ঘিরে আশান্তির কালো মেঘ ঘনাতে থাকে।
ওইদিন তারপরই শিলিগুড়ির সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ বলেদেন, 'পাহাড়ে কোনও বনধ-টনধ হবে না। বন্ধ করলে আমরা সমর্থন করব না। পাহাড়ে কেউ কেউ মাঝেমধ্যে বনধ ডাকেন। তবে উন্নয়নের জন্য নয়। কী করে পাহাড়ে অশান্তি করা যায়, সে জন্য। ২৩ তারিখ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমি পরিষ্কার নির্দেশ দিচ্ছি, কেউ যদি বঙ্গভঙ্গ নিয়ে আন্দোলন করতে যায়, সে আন্দোলন করতেই পারেন, তবে আইন হাতে তুলে নিলে কাউকে রেয়াত করা হবে না।' এর ২৪ ঘন্টার মধ্যেই বনধ প্রত্যাহার করেন বিনয়, এডওয়ার্ডরা। যা নিয়ে আজ কিছুটা সংযত সুর মুখ্যমন্ত্রীর।