/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/08/Mamata-Abhijit.jpg)
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অযোগ্যদের 'বেনামি' নিয়েগ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিশানায় এবার রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় মোখিক পর্যবেক্ষণ বলেছেন, 'আমি ইলেকশন কমিশনকে বলব, তৃণমূল কংগ্রেসের লোগো প্রত্যাহার করার জন্য। সংবিধান নিয়ে যা ইচ্ছা করা যায় না। দল হিসেবে তাদের মান্যতা প্রত্যাহার করতে বলব কমিশনকে।'
এ দিনের শুনানিতে মুখ্যমন্ত্রীর নামও উল্লেখ করেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। বলেছেন, 'আমি মুখ্যমন্ত্রীর যন্ত্রণা বুঝতে পারি। কিন্তু কিছু দালাল, যারা মুখপাত্র বলে পরিচিত, তারা আদালতের নামে যা ইচ্ছা বলছে। নিয়োগ হলেই আদালতে গিয়ে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসছে। আদালত কি এগরোলের মতো স্থগিতাদেশ বেচে নাকি? যে আদালতে এলেই স্থগিতাদেশ পেয়ে যাবে।'
অযোগ্যদের নিয়োগে ‘বেনামি’ আবেদন মামলায় ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্যের আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পরে শুক্রবার ফের কলকাতা হাইকোর্টে উপস্থিত হন রাজ্যের শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন। এজলাসে এ দিন শিক্ষাসচিবের সঙ্গে দীর্ঘ সওয়াল-জবাব চালান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
শিক্ষাসচিবকে বিচারপতির প্রশ্ন ছিল, এসএসসির অতিরিক্ত শূন্যপদ কেন তৈরি করা হল? জবাবে শিক্ষাসচিব জানান, উপযুক্ত স্তর থেকে নির্দেশ এসেছিল। এক্ষেত্রে ব্রাত্য বসুর নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনিই আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেছিলেন। রাজ্য সরকার আইনজীবী এবং অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গে কথা বলেছিল। আইন দফতর ও স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গেও কথা হয়। মুখ্যসচিবকেও সব জানানো হয়েছিল। ক্যাবিনেটে নোট পাঠানো হয়েছিল। শিক্ষাসচিব অবশ্য জানিয়েছেন, আইনজীবীরা অবৈধ নিয়োগের নির্দেশ দেননি।
ক্যাবিনেট কীভাবে অবৈধদের নিয়োগের নির্দেশ দিল বিস্ময় প্রকাশ করে তা জানতে চান বিচারপতি। তিনি বলেন, 'অবৈধদের নিয়োগ কোনও রাজ্যের নীতি হতে পারে? বলা হচ্ছে, যে কারও চাকরি যাবে না। স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবীর কাছে আবেদন দাখিল করার কোনও লিখিত নির্দেশিকাও নেই। অযোগ্যদের বেতন বাবদ কেন অতিরিক্ত প্রায় ২৬২ কোটি টাকা প্রতি বছর ব্যয় করা হবে?'
এরপরই অসন্তুষ্ট বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় রীতিমত হুমকির সুরে বলেন, 'ক্যাবিনেটকে বলতে হবে যে আমরা অযোগ্যদের পাশে নেই এবং এই নিয়ে ১৯ মে-র বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে হবে। নইলে আমি এমন পদক্ষেপ করব, যা গোটা দেশে কখনও হয়নি। আমার সন্দেহ, এ রাজ্যে হয় গণতন্ত্রই সঠিক হাতে নেই আর নাহলে গণতন্ত্র বিকশিতই হয়নি। আমি ক্যাবিনেটকে পার্টি করে দেব। সবাইকে এসে উত্তর দিতে হবে। শোকজও করতে পারি।'