মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতি'র 'মিলন উৎসবে' গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। হরেক রকম মিষ্টি দিয়ে অনুষ্ঠানে স্বাগত জানানো হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই অনুষ্ঠানেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমার কিন্তু ডায়াবেটিস নেই। আমি মিষ্টি খাই। তবে একটা কথা আপনাদের বলতে চাই। মিষ্টিতে অল্প করে মিষ্টি দিন। দেখবেন মানুষ আরও পছন্দ করবে। আপনাদের বিক্রি আরও বেড়ে যাবে।'
এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, 'মিষ্টি টাকে একটু হালকা করতে হবে। আপনারা চাইলে আমি হাল্কা করে দেখিয়ে দিতে পারি। অনেকেই জানেন না আমি কত কিছু পারি, না জেনে শুধু কুৎসা করে..। সে যাক।' উল্লেখ্য, বাড়ির কালীপুজোয় ভোগ রান্না করতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। এছাড়া বিভিন্ন জেলা সফরেও স্থানীয় দোকানে ঢুকে খাবার তৈরিতে হাত মেলাতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
এখানেই থামেননি তিনি। মিষ্টিতে নতুনত্ব আনার কথা বলেছেন মমতা। তাঁর কথায়, 'জন্মদিনে মানুষ কেক কাটছে। আপনারা (মিষ্টি ব্যবসায়ীরা) ছানার কেকটাকেই জন্মদিনের জন্য প্রমোট করুন। ওটার নাম দিন পায়েস কেক। পায়েস মাঙ্গলিক ব্যাপার। আপনারা ছানার কেকই বানান উপরে একটু চালের ছিটে দিন। ওটা প্রতীকী। তার পর উপরে নাম লেখার (যাঁর জন্মদিন তাঁর নাম) ব্যবস্থা করুন।'
মিষ্টি যে তাঁর অত্যন্ত প্রিয় তা এদিনের বক্তব্যে পরতে পরতে বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, 'আসলে মিষ্টি ব্যাপারটা বাঙালি আইডেনটিটির সঙ্গে জুড়ে রয়েছে। অনেকে ইদানীং বলে যে আমি মিষ্টি খাই না। আরে বাঙালি মিষ্টি খাওয়া ছেড়ে দিলে এত মিষ্টি বিক্রি হচ্ছে কী করে! কোথায় যাচ্ছে সে সব?'
শুধু পরামর্শই নয়, মিষ্টান্ন শিল্প তথা ব্যবসায়ীদের লাভের কথা ভেবে এবার কলকাতাতেও মিষ্টি হাব তৈরির কথা ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন, 'মানসিকভাবে মিষ্টির মতো কথা, ভাষা, চেহারা যেন হয় আমরা সবাই চাই। মিষ্টির ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেছি। রসগোল্লা, সন্দেশ, রাবড়ি, কালোজাম, জলভরা অনেক মিষ্টির কথা জানি। মালদহে গিয়ে আমি মিষ্টি হাবের কথা বলেছিলাম। আমরা একাধিক মিষ্টিতে জিআই মার্ক পেয়েছি। বসিরহাটে একটি মিষ্টি হাব করছি। চন্দননগরের জলভরাকে প্রমোট করতে মিষ্টি হাব হবে। এছাড়া কলকাতায় একটা হাব হচ্ছে। মৌলালি ট্রাম ডিপোর পাশে, সিটিসি বিল্ডিংয়ের এক তলা জুড়ে হবে মিষ্টি হাব৷ এইসব হাবে মিষ্টি প্রমোট করা হবে।' এখানেই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতর মিষ্টির দোকান, প্যাকেজিং ও ফুড কোর্টের ব্যবস্থা করছে। ইতিমধ্যেই বর্ধমান, নদিয়া, বসিরহাটে তৈরি হয়েছে মিষ্টি হাব। দার্জিলিং, কালিম্পঙে আরও মিষ্টির দোকান বানানোর পরামর্শ দিয়েছেন
মুখ্যমন্ত্রী।