মেধার আঁতুড়ঘরেই ছাত্র খুনের মারাত্মক অভিযোগ। যাকে ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য-রাজনীতিতে। উঠে এসেছে র্যাগিং-য়ের মতো মারাত্মক অভিযোগ। এবার সেই মৃত্যুর ঘটনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধের সরব নিহত ছাত্রের পরিবার।
দেশের তথা রাজ্যের প্রথম সারির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম খড়গপুর আইআইটি। সেখানে ছেলে-মেয়েকে ভর্তি করা প্রতিটি বাবা-মায়ের কাছেই যেন একটা স্বপ্ন। কিন্তু দেশের প্রথমসারির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছেলের যে এমন পরিণতি ঘটবে তা ঘুণাক্ষরেও আঁচ করতে পারেনি ফয়জান আহমেদের পরিবার।
তিনদিন ধরে ফয়জানকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। এর তিনদিন পর বাড়িতে ফোন আসে ২৩ বছর বয়সী ফয়জানকে আইআইটি-খড়গপুর ক্যাম্পাসে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। মা রেহানা আহমেদ এখনও তাঁর এক মাত্র ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় ন্যায়বিচারের আশায় তাঁর লড়াই জারি রেখেছেন।
দিনটা ছিল ১৪ অক্টোবর, ২০২২। আইআইটি খড়গপুর ক্যাম্পাসের একটি হোস্টেল রুম থেকে উদ্ধার করা হল ফয়জানের আংশিক পচাগলা দেহ। প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু ছেলের মৃত্যুর পরই পরিবার প্রতিষ্ঠানের তরফে আত্মহত্যার তত্ত্ব অস্বীকার করে। পরিবার দাবি করে আত্মহত্যা নয়, পরিকল্পনা করেই ছেলেকে খুন করা হয়েছে।
পরিবার আরও অভিযোগ করে বলে, মৃত ফয়জান ক্যাম্পাসে র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন। পাশাপাশি আইআইটি কর্তৃপক্ষের তরফে যে তদন্ত পরিচালনা করা হয় তা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করে। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলে ফয়জানের পরিবার।
ফরেনসিক রিপোর্ট থেকে স্পস্ট তার ঘাড়ে ছিল গভীর ক্ষত এবং তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল। মা রেহানা বলেছেন, “আমি কখনো কল্পনাও করতে পারিনি যে আমার ছেলেকে এভাবে অত্যাচার করা হয়েছে…। এখন আমার মনে হয় না এটা একজন ছাত্রের কাজ হতে পারে"।
আরও পড়ুন : < G7 summit 2024: তৃতীয় মেয়াদে প্রথম বিদেশ সফর মোদীর, বাইডেন-ট্রুডোর সঙ্গে বৈঠক, কী বার্তা প্রধানমন্ত্রীর? >
তিনি আরও বলেছেন, 'র্যাগিং -য়ের সময় যদি তাকে মারধরও করা হল করা তাহলে হয়তো তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভেঙে যেতে পারত। কিন্তু একটি গুলির চিহ্ন এবং ছুরিকাঘাত অন্য কিছু বলেই মনে হচ্ছে। কীভাবে আইআইটি প্রশাসন এবং পুলিশ এত কিছু ধামাচাপা দিতে মরিয়া', সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
এই অক্টোবরে ছেলের মৃত্যুর তিন বছর পূর্ণ হবে। মা রেহানা বলেন, "কয়েক মাস আগে, আমি ভাবছিলাম যে আমার আর মামলা চালানো ঠিক হবে না। কিন্তু এখন এত কিছু সামনে এসেছে। আজও নতুন নতুন জিনিস সামনে আসছে। কিন্তু এর জন্য যারা দায়ী তারা আজও অধরা"।