শুক্রবার শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে বিধানসভায় স্বাধিকারভঙ্গের নোটিস জমা দিয়েছিলেন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। শনিবার বিধানসভার অধিবেশনে সেই প্রস্তাবটি পেশ করা হয়। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সেই প্রস্তাবটি অনুমোদন করেন। তখনই প্রস্তাবটি আলোচনা এবং তদন্তের জন্য স্বাধিকারভঙ্গের সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব পাওয়ার পর এই নিয়ে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সপ্তম বার স্বাধিকারভঙ্গের নোটিস আনা হল বিধানসভায়।
স্বাধিকারভঙ্গের নোটিসেই শেষ নয়, রাজ্যের সেচ মন্ত্রী তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক কলকাতা পুলিশের হেয়ার স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। পার্থ বলেছেন, 'শুক্রবার বিধানসভায় বাজেট আলোচনার সময় যে ভাবে বিরোধী দলনেতা আমাকে হুমকি দিয়েছেন, তাতে আমি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। তাই বিধানসভায় স্বাধিকারভঙ্গের নোটিস আনার পাশাপাশি পুলিশেও অভিযোগ দায়ের করেছি।'
বিধানসভায় শুক্রবার বিধানসভায় পঞ্চায়েত বাজেট নিয়ে আলোচনা চলছিল। মাঝে ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা বিজেপি পরিষদীয় দলকে কটাক্ষ করেন। বলেন, 'দিন দিন তো আপনাদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এখন তো সংখ্যা নেমে ৬৭ হয়ে গিয়েছে।' উল্লখ্য, ৬ জন গেরুয়া বিধায়ক দলবদল করেছেন। তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন তাঁরা। সেই সূত্রে দলবদলের পর বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা এখন ৬৯। তবে অধ্যক্ষ দলবদলু বিধায়কদের বিজেপির বিধায়ক বলেই জানিয়েছেন।
পরে বক্তৃতা করতে উঠে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'এই যে বিধানসভার সদনে আমাদের সঙ্গেই বসে আছেন, কৃষ্ণ কল্যাণী এবং বিশ্বজিৎ দাস। এঁরা বিধানসভায় নিজেদের বিজেপি বিধায়ক বলছেন। স্পিকারও এঁদের বিজেপি বিধায়ক বলছেন। সাহস থাকলে বলুন এরা দলবদল করেছেন।' শুভেন্দুর এমন জবাবে দলবদলু দুই বিধায়ক বলে ওঠেন, 'আপনি আপনার বাড়ির দিকে তাকান।' সেই প্রসঙ্গেই ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে বসে সেচমন্ত্রী বিরোধী দলনেতার উদ্দেশে বলেন, 'শিশিরবাবু এখন কোন দলে আছেন?ট
এর পরেই বিরোধী দলনেতা পাল্টা সেচমন্ত্রীর উদ্দেশে মন্তব্য করেন। সেচমন্ত্রী এবং শাসকদলের বিধায়করা অভিযোগ করেন, শুভেন্দু হুমকি দিয়েছেন সেচমন্ত্রীকে। বলেছেন, 'ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস মামলায় মানবাধিকার কমিশনের অভিযোগের ভিত্তিতে তোমাকে এক মাসের মধ্যে জেলে ঢোকাব।'
তারপরই শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। সেই অভিযোগ পেয়েই অধ্যক্ষ জানিয়েছিলেন, তিনি বিষয়টি বিধানসভার রেকর্ডে নথিভুক্ত করিয়েছেন। মন্ত্রীর নিরাপত্তার বিষয়টি দেখা হবে। তবে মন্ত্রী চাইলে ওই মন্তব্যের বিরুদ্ধে স্বাধিকারভঙ্গের নোটিস আনতে পারেন। এরপরই স্বাধিকারভঙ্গের নোটিস জমা দেন পার্থ ভৌমিক। সেই প্রস্তাবই আজ পাস হল বিধানসভায়।