সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে সংসদীয় রাজনীতিতে বিজেপির উত্থানের সঙ্গে বাংলার সংগঠনের অদ্ভুত একটা মিল রয়েছে। বিজেপি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর সারা দেশ থেকে মাত্র ২ জন সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেই দুই আজ তিনশো পার করে দিয়েছে। এদিকে বাংলায় ২ জন সাংসদ থেকে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ১৮ জন সাংসদ পেয়েছে বিজেপি। এবার ২০২৪-এ তা দ্বিগুন হয়ে বাংলায় ৩৬ জন সাংসদ নির্বাচিত হতে পারেন বলে দাবি করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বিজেপি। লক্ষ্য ছিল ২০১৯ লোকসভা নির্বাচন। কার্যত ওই পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছিল বিজেপি। পঞ্চায়েতে প্রার্থী দিতে বাধা দেওয়া থেকে ভোট না দিতে দেওয়ার বিস্তর অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক মহলের অভিমত ছিল, তৃণমূলকে পঞ্চায়েতের ফল ভোগ করতে হয়েছে লোকসভার ভোটে। আগামী বছর ২০২৩-এ রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন, তার পরের বছরই লোকসভা নির্বাচন। ফের পঞ্চায়েতে বিজেপিকে প্রার্থী দিতে দেবে না। শুক্রবার কাঁথিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'পঞ্চায়েতে মনোনয়নপত্র জমা না দিতে দিলে গত লোকসভাতে ১৮ ছিল বিজেপি এবার ৩৬ হবে।' ২০২৪-এ তৃণমূল সরকারের বিদায় হবে, সরকার চালাতে পারছে না বলে দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা।
আরও পড়ুন- SSC-প্রাথমিকে চাকরির নামে প্রতারণা, কাঠগড়ায় সরাসরি তৃণমূল বিধায়ক
এদিকে সম্প্রতি বিজেপির সর্বভারতীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মার বিতর্কিত বক্তব্য নিয়ে তোলপাড় হয়েছে এই রাজ্য। হাওড়ায় রাস্তা অবরোধ থেকে আগুন-ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটেছে। বিজেপির দলীয় কার্যালয় থেকে দোকান-ঘরে ভাঙচুর-আগুন ধরানোর প্রতিবাদে এবার রাস্তায় নামতে চলেছে বঙ্গ বিজেপি। শুভেন্দু বলেন, 'দোকান ভাঙার ক্ষতিপূরণ আদায় হবে। ১৪৪ উঠলেই ধ্বজ নিয়ে যাত্রা শুরু হবে। সিঙা আর শাঁখ বাজিয়ে যাত্রা শুরু হবে। ২৫ জুন প্রথমে নাকাশিপাড়া দিয়ে শুরু হবে।'
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পর ফের দিল্লি জয়ের ডাক দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এর আগে ২০১৯-এ ৪২-এ-৪২ স্লোগান মুখ থুবড়ে পড়েছিল। তবে বিধানসভায় বিপুল জয়ের পর ফের মনোবল চাঙ্গা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। হৃত লোকসভার আসন পুনরুদ্ধারে ঘাসফুল শিবিরও ঝাঁপিয়ে পড়বে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ইতিমধ্যে উপনির্বাচনে আসানসোল কেন্দ্র বিজেপির হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ব্যারাকপুরে বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং দলত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তারই মধ্যে আগাম হুঙ্কার দিয়ে রাখলেন শুভেন্দু অধিকারী।