লকডাউনের জের! বাংলায় ধানের ফলনে দেরি, বাড়ছে মজুরী

"গত বছর প্রতিদিন ২০০টাকা আর ২ কিলো চাল দেওয়া হত আমাদের। এবছর ৩৫০ টাকা আর ২ কিলো চাল দেওয়া হচ্ছে। তবে কাজও অনেক বেশি।"

"গত বছর প্রতিদিন ২০০টাকা আর ২ কিলো চাল দেওয়া হত আমাদের। এবছর ৩৫০ টাকা আর ২ কিলো চাল দেওয়া হচ্ছে। তবে কাজও অনেক বেশি।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

এক্সপ্রেস ফোটো- পার্থ পাল

'কোথায় এমন হরিৎক্ষেত্র আকাশ তলে মেশে?' বর্ধমান জেলার অজপুর গ্রামে দৃশ্যটা একপ্রকার সেরকমই। কিন্তু গানের সুরের সঙ্গে কাজের সুর সেখানে অনেকটাই বেমানান। লকডাউনের জেরে প্রায় এক মাস দেরি রোপণ করা ধানের ফলন সময়ে তুলতে চিন্তায় জমির মালিকেরা। তবে খানিক স্বস্তিতে চাষীরা। লকডাউনের ফলে বেড়েছে তাঁদের মজুরী।

Advertisment

পেশায় ধানচাষী যাদব ঘরুই বলেন, "গত বছর প্রতিদিন ২০০টাকা আর ২ কিলো চাল দেওয়া হত আমাদের। এবছর ৩৫০ টাকা আর ২ কিলো চাল দেওয়া হচ্ছে। তবে কাজও অনেক বেশি। আমাদের মোট আটজনকে নেওয়া হয়েছে সারা মাসের জন্য। রাতেও কাজ করছি।" প্রসঙ্গত রবি শস্য খ্যাত বাংলার বোরো ধান নভেম্বরে রোপণ করা হয় এবং এপ্রিলে সেই ধান কাটা হয়। কিন্তু লকডাউনের ফলে সমস্ত কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় এক মাস পিছিয়েছে ফসল কাটার কাজ।

এদিকে করোনার জেরে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে জমির মালিকদের কপালেও। কম মজুরীতে কাজ করা বিহার ঝাড়খন্ড, বীরভূম, পুরুলিয়ার শ্রমিকদের আসা বন্ধ হয়েছে এ রাজ্যে। ফলে বেশি মজুরী দিয়েই স্থানীয় চাষীদের দিয়ে বর্ষা আসার আগেই ধান কাটার কাজ শুরু করাতে বাধ্য হয়েছেন মালিকেরা। যদিও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ফসল কাটার মেশিন চালু করতে বললেও সেই মেশিন চালানোর শ্রমিকেরা আসত পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা থেকে। লকডাউনে বন্ধ হয়েছে সেই দুয়ারও। অগত্যা স্থানীয় হাতেই বেশি মজুরি দিয়ে কাজ করাতে বাধ্য হচ্ছেন জমির মালিকেরা।

publive-image এক্সপ্রেস ফোটো- পার্থ পাল

Advertisment

জমিতে কাজ করা অপর এক চাষী সন্ধ্যা মালিক বলেন, "লকডাউনের কয়েক সপ্তাহ পর আমাদের হাতে কোনও টাকা ছিল না। কী করে পেট চালাবো বুঝতে পারিনি। কিন্তু এখন অবস্থা বদলেছে। আমি এখন আমার পরিবারের জন্য বিস্কুট, দুধ, সবজি সব কিনতে পারছি। ভগবান আছেন।" মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃষিক্ষেত্রের উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, "সামাজিক দূরত্বের নিয়ম রেখেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ধান কাটা হচ্ছে।"

এদিকে রাজ্যে গত সপ্তাহের বৃষ্টি নিয়ে চিন্তায় রয়েছে চাষীরা। পূর্ব বর্ধমানের ডেপুটি ডিরেক্টর (কৃষি) জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "“যদি বেশি জল থাকে তবে ধান অঙ্কুরিত হবে না। ১২ শতাংশেরও কম আর্দ্রতাসম্পন্ন ধান সংরক্ষণ করার উপযোগী হয়। ১৫ শতাংশের বেশি হলে সেখানে পোকা ধরে যায়। আর যদি ২০ শতাংশের বেশি হয় তাহলে চাল ফেলে দিতে হয়।"

Read the full story in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

West Bengal