Advertisment

ঠাণ্ডায় স্নানে নারাজ স্বামী, নাছোড়বান্দা স্ত্রীও, চটে গিয়ে বাড়িই ছাড়লেন চিকিৎসক

বাড়ির বাইরেই চেম্বারে রোগী দেখেন ডাক্তারবাবু। করোনাকালে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই তাঁকে স্নান সেরে ঘরে ঢুকতে বলেছিলেন স্ত্রী।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
in bongaon Husband unwilling to bath in cold homeless doctor arguing with wife

ভদ্রেশ্বর থানার পুলিশকর্মীরা মানুকুণ্ডু স্টেশন থেকে হদিশ পান চিকিৎসকের। ছবি: উত্তম দত্ত

ঠাণ্ডায় স্নানে আপত্তি স্বামীর। স্ত্রীর সঙ্গে কলহের জেরে বাড়ি ছেড়েই বেরিয়ে যান পেশায় চিকিৎসক স্বামী। শেষমেশ পুলিশি তৎপরতায় খোঁজ মেলে ওই ব্যক্তির। ছেলে এসে বাবাকে বাড়ি নিয়ে যেতে মেটে অশান্তি। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে গোটা পরিবার। বনগাঁর এই ঘটনা ঘিরে চর্চা সর্বত্র।

Advertisment

করোনা আতঙ্কে জেরবার গোটা বিশ্ব। এদেশেও ভাইরাসের বাড়-বাড়ন্ত জারি। বাংলাতেও পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। করোনাকালে চিকিৎসকদেরই সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হচ্ছে। হাসপাতালের পাশাপাশি যাঁরা প্রাইভেট চেম্বারেও রোগী দেখছেন তাঁদেরও অনেকেই প্রায়শই সংক্রমিত হয়ে পড়ছেন। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর বাসিন্দা পেশায় চিকিৎসক কান্তি চক্রবর্তী। আচমকা বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। ১৫ জানুয়ারি বাড়ি থেকে বেরনোর পর বেশ কয়েকদিন তাঁর আর খোঁজ মেলেনি।

তাঁর গৃহত্যাগের কারণটা বেশ অবাক করা। চিকিৎসক কান্তি চক্রবর্তীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনাকালে বাড়ির বাইরে চেম্বারে রোগী দেখেন কান্তিবাবু। ফি দিন চেম্বারে অসংখ্য রোগীর ভিড় লেগেই থাকে। এমনই একদিন রোগী দেখার পর তাঁকে স্নান সেরে ঘরে ঢুকতে বলেন তাঁর স্ত্রী। কারণ হিসেবে তিনি জানান, এভাবে রোগীদের সংস্পর্শে আসতে থাকায় যে কোনও মুহূর্তে তাঁরও সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কান্তিবাবুর থেকে বাড়ির অন্যরাও সংক্রমিত হতে পারেন। সেই কারণেই স্বামীকে স্নান সেরে ঘরে ঢুকতে বলেছিলেন চিকিৎসক-পত্নী। তাতেই চটে যান কান্তিবাবু।

ঠাণ্ডায় তিনি স্নান করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন স্ত্রীকে। স্ত্রীও কোনও কথা শুনতে রাজি ছিলেন না। স্নান না সারলে স্বামীকে ঘরেই ঢুকতে দেবেন না বলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন। এই নিয়েই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বচসা বাড়তে থাকে। স্ত্রীর প্রতি একরাশ অভিমানে শেষমেশ বাড়ি ছেড়েই বেরিয়ে যান চিকিৎসক কান্তি চক্রবর্তী নামে ওই ব্যক্তি।

এদিকে, বাড়ির কর্তা আচমকা নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় স্বভাতই ঘোর দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় গোটা পরিবার। হন্যে হয়ে এই ক'দিন কান্তিবাবুকে খুঁজে বেরিয়েছেন স্ত্রী, ছেলে-সহ অন্য আত্মীয়রা। এমনকী বনগাঁ থানাতেও করা হয়েছে মিসিং ডায়েরি। খোঁজ মেলেনি চিকিৎসকের। শেষমেশ সোমবার ভোরে খোঁজ মেলে কান্তি চক্রবর্তীর।

আরও পড়ুন- আধার ছাড়াই মিলবে টিকা, ফুটপাতবাসীদের জন্য উদ্যোগ হাওড়া পুরনিগমের

হুগলির মানকুণ্ডু স্টেশনে টিকিট কাউন্টারের সামনে এক ব্যক্তিকে বসে থাকতে দেখেন টহলরত পুলিশকর্মীরা। অপরিচিত এক ব্যক্তিকে এভাবে ভাবলেশহীন ভাবে বসে থাকতে দেখে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করেন পুলিশকর্মীরা। জবাবে কান্তিবাবু গোটা ঘটনা পুলিশকর্মীদের খুলে বলেন। এই ক'দিন তিনি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেরিয়েছিলেন বলেও জানান।

কান্তি চক্রবর্তীর কাছ থেকেই এরপর ফোন নম্বর জোগাড় করে তাঁর ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পুলিশকর্মীরা। ছেলে অর্পণ খবর পেয়ে দ্রুত ভদ্রেশ্বর থানায় ছুটে আসেন। অবশেষে ছেলের গাড়ি করেই বাড়ি ফিরেছেন ডাক্তারবাবু। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে গোটা পরিবার।

police Hooghly West Bengal Bongaon
Advertisment